“মা-বাবা আমাকে মাফ করে দিও। আমি তোমাদের সাথে থাকতে পারলাম না। আমার জান আমার জন্য ফাঁসিতে ঝুলছে। তাই আমি থাকতে পারলাম না। আমি কাউকে দোষ দেই না। কারো কোনো দোষ নাই। আমার জান আমার জন্য অপক্ষো করতেছে। সবাই ভালো থাকবা।”
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিম খন্ড (মাওনা চৌরাস্তা) এলাকার একটি বাড়ি থেকে এক দম্পতির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহের পাশে টেবিলে রাখা চিরকুটে এসব কথা লেখা ছিল।
পুলিশের ধারণা, ইসরাফিল (১৭) ও রোকেয়া খাতুন (১৫) আত্মহত্যা করেছেন। মৃত্যুর আগে ইসরাফিল চিরকুটে এসব কথা লিখে রাখে।
চিরকুটে আরও লেখা, “মা আমার পাশে রোকেয়ার কবর দিও মা। মা আমি জানি না আমার জান কেন ফাঁসি দিল। তার জন্য সম্পূর্ণ আমি দায়ী। এতে কারো কোনো দোষ নাই।”
ইসরাফিল শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলা হলদি গ্রামের মফিজুল হকের ছেলে। তার স্ত্রী রোকেয়া খাতুন (১৫) ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার পস্তারি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে।
রোকেয়ার ভাই আবু রায়হান জানান, আনুমানিক আট মাস আগে ইসরাফিল-রোকেয়া ভালোবেসে বিয়ে করে। তারা উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামে ভাড়া থেকে স্থানীয় বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কাজ করত। মাস তিনেক আগে ইসরাফিল বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে যায়। স্ত্রীকে নিয়ে সে উপজেলার মুলাইদ এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস থাকতে শুরু করে।
বৃহস্পতিবার তাদের বুঝিয়ে বাসায় নিয়ে আসেন ইসরাফিলের বাবা-মা। সকালে তারা ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে। তাদের সম্পর্ক ভালো ছিল। কেন তারা আত্মহত্যা করেছে তা বলতে পারছি না।
কালিয়াকৈর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আজমীর হোসেন বলেন, “খবর পেয়ে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্ত্রী রোকেয়া আত্মহননের পর তার শোকে স্বামী ইসরাফিল আত্মহত্যা করেছে। আমরা সুইসাইড নোট সংগ্রহ করেছি। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”