গোপালগঞ্জে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিককে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাকসুদুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে কোটালীপাড়া উপজেলার তালপুকুরিয়া গ্রামের কমলেশ বাড়ৈকে হত্যার এই মামলায় স্ত্রী সুবর্ণা বাড়ৈ (৩৮) ও তার পরকীয়া প্রেমিক মন্মথ বাড়ৈকে (৪০) মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের দুজনই পলাতক রয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, কমলেশ বাড়ৈ কাঠমিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার স্ত্রী গৃহবধূ সুবর্ণা বাড়ৈ একই গ্রামের মন্মথ বাড়ৈর সঙ্গে বিবাহ-বর্হিভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি স্বামী কমলেশ বাড়ৈ জানতে পারেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ শুরু হয়। সুবর্ণা বাড়ৈ ও তার পরকীয়া প্রেমিক এজন্য কমলেশকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
২০২০ সালের ২ মার্চ গভীর রাতে খাবারের সঙ্গে কমলেশকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হয়। পরে তাকে হত্যা করে মরদেহটি স্থানীয় একটি মাছের ঘেরের পাড়ে মাটিচাপা দিয়ে রাখা হয়।
এ ঘটনার প্রায় ৩ মাস পর ঘেরপাড় থেকে কমলেশের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ৩০ মে কমলেশের ভাই রমেশ বাড়ৈ বাদী হয়ে সুবর্ণা ও মন্মথকে আসামি করে কোটালীপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এরপর কোটালীপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল করিম মামলাটির তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর আদালতে ২ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।
শুনানি ও স্বাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে বিচারক সুবর্ণা ও মন্মথকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী সুভাষ চন্দ্র জয়ধর, অন্যদিকে আসামি পক্ষে ছিলেন এইচএম মহিউদ্দিন।
সুভাষ চন্দ্র জয়ধর বলেন, “মামলা দায়েরের পর পুলিশ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে। পরে তারা জামিনে বের হয়ে আর আদালতে হাজির হননি। এ রায় ঘোষণার সময় তাই আসামিরা আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।”