ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নে অজ্ঞাত একটি রোগে মাত্র ১২ দিনের ব্যবধানে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যুর আলোচিত ঘটনায় ভান্ডারদহ গ্রামের আবু তাহেরের বাড়ী পরিদর্শন করেছে ঢাকা থেকে আসা রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ৫ সদস্যের একটি তদন্ত টিম।
বুধবার দুপুর দেড়টায় মৃত পরিবারের বাড়িতে পৌঁছায় তদন্ত টিম। এরপর ওই পরিবারের অন্যান্য সদস্য, এলাকাবাসী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সাথে কথা বলেন এবং আবু তাহেরের বাড়ীর ৪টি কক্ষ থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ঠাকুরগাঁও ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন শাহজাহান নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, “ঘটনাস্থল থেকে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করেছেন। রাজশাহী থেকে আরেকটি মেডিকেল টিম ওই উদ্দেশ্যে ঠাকুরগাঁওয়ে আসছেন। দুটো মেডিকেল টিমই ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ দিন অবস্থান করবে। সংগৃহিত নমুনা ঢাকায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।” ঢাকা থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন আসলেই ৫ জনের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে আশা করছেন তিনি।
এদিকে, এ আতঙ্কের কারণে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আক্রান্ত এলাকার ১ কিলোমিটারে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারিসহ মুখে মাস্ক পরে চলাফেরা এবং স্থানীয় দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়। তবে প্রতিষ্ঠান দুটি বৃহস্পতিবার থেকে খুলে দেয়া হবে বলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানা গেছে।
স্থানীয়দের দাবি, ঘটনাটি কোন ভাইরাসজনিত কারণ নয়। আবু তাহের পেশাগত কবিরাজ ছিলেন। দেবী-দেবতার পূজা করে আসতেন। পূজায় সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার কারণে প্রথমে তার মৃত্যু এবং পরে ধীরে ধীরে তার পরিবারের লোকজন মারা গেছেন বলে কুসংস্কারাচ্ছন্ন এলাকার লোকজন ভাবছেন। তবে এসব কথা মেডিকেল টিমকে জানালেও বিষয়টি গুরুত্ব দেননি তাঁরা।
উল্লেখ্য যে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত একটি রোগে মরিচপাড়া গ্রামের ফজর আলীর ছেলে আবু তাহের (৫৫) মৃত্যুবরণ করেন। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি একই দিনে মারা যান আবু তাহেরের জামাতা হাবিবুর রহমান (৩৫) ও স্ত্রী হোসনে আরা (৪৫)। এর দুইদিন পর ২৪ ফেব্রুয়ারি আবু তাহেরের দুই ছেলে ইউসুফ আলী (৩০) ও মেহেদী হাসান মৃত্যুবরণ ও ওই পরিবারের ৬/৭ জন অসুস্থ হলে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
আরো পড়ুন-ঠাকুরগাঁওয়ে অজ্ঞাত রোগ, আতঙ্কে এলাকাবাসী