চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার (৯ মে) দিন ধার্য রয়েছে। ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক আরুণাভ চক্রবর্তী এ রায় ঘোষণা করবেন।
এর আগে, গত ২৯ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে এ মামলায় রায় ঘোষণার জন্য ৯ মে দিন ধার্য করেন আদালত।
মামলায় আসামিরা হলেন ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, ফারুক আব্বাসী, আদনান সিদ্দিকী, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন, আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।
এই ৯ আসামির মধ্যে পাঁচজন পলাতক। তারা হলেন ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, আফাকুল ইসলাম, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ও আদনান সিদ্দিকী। এছাড়া আসামি আশীষ রায় চৌধুরী, তারিক সাঈদ মামুন ও ফারুক আব্বাসী জামিনে আছেন। আর কারাগারে আছেন সানজিদুল ইসলাম ইমন।
১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবের সামনে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন। পরে তদন্ত করে গোয়েন্দা পুলিশ দাবি করে আলোচিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলাম ও আশীষ রায় চৌধুরীর সঙ্গে বিরোধের জেরে ভাড়াটে খুনিদের দিয়ে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর কথা-কাটাকাটি হয়। এর প্রতিশোধ নিতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়। ঘটনার রাতে সোহেল তার বন্ধুদের নিয়ে ট্রাম্পস ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করেন। তাকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। রাত আড়াইটার দিকে আবারও তিনি ঢোকার চেষ্টা করেন। তখন সোহেলকে লক্ষ্য করে ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক ও আদনান গুলি চালান।
মামলার তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর দুই বছর পর মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দুই নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
মামলা দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আসামি আদনান সিদ্দিকী ২০০৩ সালের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন। বিচারপতি মো. রূহুল কুদ্দুস এবং বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর তৎকালীন ডিভিশন বেঞ্চ শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট রায় দেন। রায়ে রুলটি খারিজ করে দেওয়া হয়; হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলার নথি বিচারিক আদালতে ফেরত আসলে সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরুর উদ্যোগ নেন বিচারিক আদালত। বিচার চলাকালে ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।