জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের (এনএসআই) সহকারী পরিচালক মো. আকরাম হোসেন (৫৫) ও তার স্ত্রী সুরাইয়া পারভীনের (৪৮) বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুরে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান।
মামলায় মো. আকরাম হোসেন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. আকরাম হোসেন দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে এক কোটি ৬১ লাখ ৭৯ হাজার ৫২০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। একইসঙ্গে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা দেওয়া ছাড়াও স্ত্রী সুরাইয়া পারভীনের সঙ্গে যোগসাজশে অসাধু উপায়ে অর্জিত ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৬ কোটি ৭০ লাখ ৩৯ হাজার ৩৬২ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেন। সেই সম্পদ ভোগ-দখলে রেখে দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
দুদকের অভিযোগ, সুরাইয়া পারভীনের মোট ২৫টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১২৬ কোটি ৩৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা জমা ও ১২৫ কোটি ২৫ লাখ ৭৪ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে, যা অস্বাভাবিক। স্ত্রী সুরাইয়া পারভীন হয়ে এসব লেনদেন করেছেন আকরাম হোসেন নিজে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আকরাম হোসেন একটি সরকারি সংস্থায় চাকরি করে স্ত্রী সুরাইয়া পারভীনের নামে ব্যবসা দেখিয়ে নিজেই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। ব্যবসা স্ত্রীর নামে হলেও ফ্যাক্টরি ও সম্পদ তার নিজ নামে।
তবে, ব্যবসা সংক্রান্ত কোনো অনুমোদন তার নেই। সুরাইয়া পারভীনের নামে থাকা স্টার ইলেক্ট্রো ওয়ার্ল্ড ও লিরা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস প্রকৃতপক্ষে আকরাম হোসেনের বেনামি প্রতিষ্ঠান। সুরাইয়া পারভীন ২০০৯-১০ করর্বষে আট লাখ টাকা বিনিয়োগ দেখিয়ে ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা ব্যবসা থেকে আয় দেখালেও ওই সময় তার কোনো আয়ের উৎস ছিল না। প্রকৃতপক্ষে, আকরাম হোসেন স্ত্রীকে ব্যবসায়ী হিসেবে দেখিয়ে তার অবৈধ সম্পদকে বৈধ করার প্রয়াস চালিয়েছেন।
একটি মামলায় মো. আকরাম হোসেন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১ কোটি ৬১ লাখ ৭৯ হাজার ৫২০ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন এবং মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা দিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে যোগসাজশে ৬ কোটি ৭০ লাখ ৩৯ হাজার ৩৬২ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরেকটি মামলায় মেসার্স স্টার ইলেক্ট্রো ওয়ার্ল্ডের মালিক সুরাইয়া পারভীনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২০ লাখ ৯৩ হাজার ৫৫১ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।