বরগুনার আমতলী উপজেলার হলুদিয়া ইউনিয়নেরচিলা গ্রামে অবস্থিত প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ঝড়ে উড়ে যাওয়ায় খোলা আকাশের নীচেই চলছে বিদ্যালয়টির পাঠদান। এদিকে, রোদ-বৃষ্টি-ঝড় ও বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে বাধ্য হয়েই পাঠদান চালাচ্ছেন শিক্ষকরা। ২৫ ফেব্রুয়ারি আকস্মিক টর্নেডোর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয় বিদ্যালয়টি। এরপর থেকেই খোলা আকাশের নীচে পাঠদান চলছে বিদ্যালয়টিতে।
রবিবার (১০ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উত্তর-পশ্চিম চিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নীচে পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকরা। কাঠফাটা রোদে একইসাথে ৬টি শ্রেণীর শিক্ষার্থীর বসার কারণে অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছে পাঠদানেও।
প্রসঙ্গত, বিদ্যালয়টিতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে শিক্ষার্থী রয়েছে ৮৯ জন। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিকে ১৫জন, প্রথম শ্রেণীতে ২০, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ১৩জন, তৃতীয় শ্রেণীতে ১২ জন, চতুর্থ শ্রেণীতে ১৩জন ও পঞ্চম শ্রেণীতে ১৬ জন। এখানে সরকারিভাবে ৪জন ও স্থানীয়ভাবে ১জন শিক্ষক কর্মরত আছে।
জানা গেছে, ১৯৬১ সালে বরগুনার আমতলী উপজেলার হলুদিয়া ইউনিয়নে স্থাপন করা হয় উত্তর-পশ্চিম চিলা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। এরপর দীর্ঘ বছর পর ১৯৯৪ সালে এখানে একটি একতলা পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। ২০১৫ সালে ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে স্থানীয় শিক্ষা অধিদপ্তর ।
এরপর স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা অধিদপ্তরের সহায়তায় একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. মাহফুজ ও রাশেদুল জানান, “প্রতিদিন খোলা আকাশের নিচে বসে ক্লাস করায় গাছের পাতা ও ডালপালা ভেঙে গায় পড়ে। এছাড়াও প্রচন্ড রোদে কষ্ট পেতে হয়।”
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাকিবুল হাসান ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “২৫ ফেব্রুয়ারি সকালের আকস্মিক ঝড়ে বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এরপর থেকেই খোলা আকাশের নিচে আমরা পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।”
উত্তর-পশ্চিম চিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজিয়া সুলতানা বলেন, “আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ বিদ্ধস্ত হওয়ার সাথে সাথে আমরা উপজেলা প্রশাসন ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। উপজেলা প্রথামিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসে সরেজমিনে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে গেছেন। আশা করি শীঘ্রই শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখান জন্য তারা পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।”
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এম এম মিজানুর রহমান ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “বিদ্যালয়টির আগের ভবন পরিত্যক্ত হওয়ায় এখানে একটি নতুন বিদ্যালয় ভবন নির্মানের জন্য কাজ শুরু হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে শীঘ্রই নতুন বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করা হবে।”
বরগুনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষৎ তাই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয় সে জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতদ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। ”