নাটোরে গাছে গাছে আসতে শুরু করেছে আমের মুকুল। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর মুকুলের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ এবং চাষীরা।
আমের ফলন অধিক হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এবার অধিক জমিতে আমের বাগান করেছেন চাষীরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আম চাষ করা হয়েছিল ৪৮৪৪ হেক্টর জমিতে। ফলন পাওয়া গিয়েছিল ৬২ হাজার ৩২৮ মেট্রিক টন।
কিন্তু চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নাটোরে আমের চাষ করা হয়েছে ৪৮৫০ হেক্টর জমিতে।
এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৮৭০ হেক্টর, নলডাঙ্গা উপজেলায় ৩৯০ হেক্টর, সিংড়া উপজেলায় ৩৭৫ হেক্টর, গুরুদাসপুর উপজেলায় ২৯২ হেক্টর, বড়াইগ্রাম উপজেলায় ৫৮২ হেক্টর, লালপুর উপজেলায় ১৭ শ ৮০ হেক্টর এবং বাগাতিপাড়ায় উপজেলায় ৫৫৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে উপ পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, ক্ষিরসাপাত, গোপাল ভোগ, আশ্বিনা, ল্যাংড়া, ফজলি, লক্ষণভোগ, আম্রপালি, মল্লিকা, বারি এবং লকনা জাতের আম নাটোরে বেশি উৎপাদিত হয়।
সরেজমিনে বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। কোন কোন গাছে ৫০ থেকে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত মুকুল আকার ধারণ করেছে।
নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া উত্তরা গণভবন বাগানে আম গাছে মুকুল দেখা গেছে।
গত বছরের তুলনায় তিনি বেশি ফলনের আশাবাদ ব্যক্ত করে গণভবনের তত্ত্বাবধায়ক খায়রুল বাশার জানান, গত বছরের তুলনায় এবারে আম গাছে মুকুলের সংখ্যা বেশি।
নলডাঙ্গা উপজেলার লক্ষীকোল গ্রামের রহিদুল ইসলাম জানান, ঠিক আছে যে পরিমাণে মুকুল এসেছে তার যদি শেষ পর্যন্ত থাকে তবে আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি।
সদর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের গৃহবধূ মাসুরা বেগম কাকলি জানান, তার একটি ফজলি আম গাছ, কয়েকটি আম্রপালি এবং কয়েকটি ল্যাংড়া আম গাছ আছে। প্রত্যেকটি গাছেই প্রচুর পরিমাণে মুকুল এসেছে। বড় ধরনের কোনো কালবৈশাখী ঝড় বা শিলা বৃষ্টি অথবা অন্য কোন কারণে মুকুল ঝরে না পড়লে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি আম পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত জেলার কোন উপজেলায় শিলা বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক কালবৈশাখী ঝড় হয়নি। বরং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাছে গাছে অধিক মুকুল এসেছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জেলায় এবারও গতবারের তুলনায় অধিক ফলন পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে রফিকুল ইসলাম জানান, করে উৎপাদিত আম এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় আম্রপালি। এর পরেই রয়েছে লক্ষণভোগ।
নাটোরে উৎপাদিত সকল জাতের আম অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় স্থানীয় মানুষের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তা রপ্তানি হয় দাবি করে তিনি জানান, এর মাধ্যমে প্রতিবছর কৃষকরা আম বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। ফলে দিনের পর দিন নাটোরে আম চাষের সংখ্যা বাড়ছে।