বিড়ালছানাকে মেরে টুকরো করে কেটে ফেসবুকে ভিডিও প্রকাশ করার অভিযোগে এক কিশোরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাণীর কল্যাণ বিষয়ক সংগঠন ‘কেয়ার ফর পস’ এর সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেনের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাতে মুগদা থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এরপর গতকাল শুক্রবার জামিন দেয়া হয় তাকে।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) জাহিদ হোসেন বাদী হয়ে প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা আইনে ওই কিশোরীর বিরুদ্ধে মুগদা থানায় মামলা করেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রলয় কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মুগদা থানার ওসি প্রলয় কুমার সাহা বলেন, "মামলা দায়েরের পর বৃহস্পতিবারই ওই কিশোরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। শুনানির পর আদালত তাকে জামিন দিয়েছেন"।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, ওই কিশোরী তাদের জানিয়েছে, ২০১৭ সালে এসএসসি পাসের পর অসুস্থতার কারণে পড়াশোনায় ছেদ পড়ে। এখন সে বাসায় বিশ্রামে আছে। ব্যবহারিকের অংশ হিসেবে বিড়ালটি কেটেছিল সে। প্রাপ্তবয়স্ক নয় বলে আদালত তাকে জামিন দেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৭ মার্চ রাত ১০টার দিকে জীবন্ত বিড়ালের বাচ্চাকে হত্যার ভিডিও ধারণ করে ইশরাত জাহান মেহজাবিন। এরপর বাচ্চাটির মৃতদেহ পলিথিনে মুড়ে ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দেন। পরদিন ১৮ মার্চ ময়লাওয়ালা তা নিয়ে যায়।
এজাহারে আরও বলা হয়, বিড়ালটিকে হত্যার ভিডিও ১৭ মার্চ ধারণ করা হলেও ইশরাত জাহান তা নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে আপলোড করেন ১৯ মার্চ রাত ৯টার দিকে। নিষ্ঠুর এই হত্যাকাণ্ডের ভিডিওটি রাতের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। একটি প্রাণীকে এভাবে হত্যার নিন্দা জানান বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। একইভাবে ভিডিওটি চোখে পড়ে প্রাণীদের কল্যাণে কাজ করা সংগঠন কেয়ার ফর পস-এর সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেনের। তিনি প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কিশোরীর পরিচয় ও ঠিকানা খুঁজে বের করেন। এরপর ২১ মার্চ দুপুরে ইশরাতের বাসায় যান তারা। এ সময় ইশরাত বিড়ালের বাচ্চাটিকে হত্যা, ভিডিও ধারণ ও প্রকাশ করার বিষয়গুলো স্বীকার করেন বলে জানান কেয়ার ফর পস-এর সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন।
জাহিদ হোসেন বলেন, "মামলাটি ১৯২০ সালের প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা আইনে করা হয়েছে। আমরা এর পাশাপাশি সাইবার অ্যাক্টেও মামলাটি করতে চেয়েছিলাম। পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করেছে। তবে সাইবারে মামলা নেওয়া হয়নি। আমরা এই মামলাটি করেছি যাতে ভবিষ্যতে কেউ প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর হওয়ার আগে ভাবে, এমনটি করা হলে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাবো"।