বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির ও নাশকতা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি আবদুর রহিম। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার উপজেলার মাঝিড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত ক্রীড়া অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।
জামায়াতের ওই নেতার নাম আবদুর রহিম। তিনি মাঝিড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক।
জামায়াত নেতার অনুষ্ঠান পরিচালনার বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গৌর গোপাল গোস্বামীসহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা বলেন, এমন ঘটনায় তারা লজ্জা ও কষ্ট পেয়েছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দিলিপ কুমার চৌধুরী জানান,স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে জামায়াত নেতা ও নাশকতা মামলার আসামিকে রাখা অন্যায় হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির আবদুর রহিম জানান, তিনি ২০১৬ সাল থেকে রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছেন। ২০১৩ সালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে চাঁদে দেখার গুজবে কিছু নাশকতা হয়েছিল। তখন তার নামে ওই সংক্রান্ত একটি মামলায় করা হয়। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম জানান, আবদুর রহিম এখন জামায়াতের রাজনীতিতে সক্রিয় নন। তার বিরুদ্ধে থাকা নাশকতার মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
এদিকে একই অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর মাইকে অন্য সব অতিথির নাম ঘোষণা করা হলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের নাম বলা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এর জের ধরে দলটির নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠান বয়কট করেন। এ নিয়ে বিশৃঙ্খলাও দেখা দেয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দিলিপ কুমার চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, ভোরে শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে তারা দলীয় কর্মসূচি শেষে সকাল ৮টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের ওই অনুষ্ঠানে যান। সেখানে তাদের মঞ্চে ডাকা হয়নি। এমনকি পতাকা উত্তোলন ও বেলুন ওড়ানোর সময়ও ডাকা হয়নি। পরে মাইকে অন্যদের নাম ঘোষণা করা হলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের নাম বলা হয়নি। তাই উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে যান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তৌফিক আজিজ জানান, অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম ঘোষণা না করায় ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে তার সমাধান হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফুয়ারা খাতুন জানান, আবদুর রহিম জামায়াতের নেতা কিনা সে সম্পর্কে তার কিছু জানা নেই। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতাদের নাম দুদফা বলা হয়েছে। তৃতীয় দফা না বলায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে চলে যান।
আজকের অনুষ্ঠানে বিএনপি সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান সরকার বাদল প্রধান অতিথি এবং ইউএনও ফুয়ারা খাতুন সভাপতি ছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দিলীপ কুমার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক তালেবুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুর রহমান দুলু, নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন সান্নু, ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এম সুলতান আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।