বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) ড. এস এম ইমামুল হক আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এবার ‘স্বাধীনতার পক্ষের লোক নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন।
অপরদিকে ঢালাওভাবে প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থীদের বিষয়ে ভিসি ‘রাজাকারের বাচ্চা’ মন্তব্য করেননি বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে।
যাতে উল্লেখ করা হয়, যারা (শিক্ষার্থী) স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে তারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী নয় বলেই আমার কাছে প্রতিয়মান হচ্ছে। তাদের কার্যক্রম রাজাকার সাদৃশ্য।
প্রসঙ্গত, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্বাধীনতা দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের না রাখার প্রতিবাদ করায় তাদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে ভৎর্সনার অভিযোগ উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে।
এর প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের গেইটে তালা ঝুলিয়ে ক্লাশ ও পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে।
তবে, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হলেও শিক্ষার্থীরা ভিসির মন্তব্য প্রত্যাহার ও ক্ষমার চাওয়ার দাবিতে তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) ড এসএম ইমামুল হক বলেন, ‘ক্ষমা চাওয়ার কোনো বিষয় নেই। অনাকাঙ্খিত ঘটনার যাতে সৃষ্টি না হয়, সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অযৌক্তিক। যারা স্বাধীনতা দিবস আয়োজনের বিরোধিতা করে, তারা স্বাধীনতার পক্ষের লোক নয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এসএম ইমামুল হক স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ক্যাম্পাসে নানা কর্মসূচির ঘোষণা দিলেও ফুল দেয়া ছাড়া আর কোনো অনুষ্ঠানে (মধ্যাহ্নভোজ ও সাংস্কৃতিক) শিক্ষার্থীদের রাখা হয়নি। এর প্রতিবাদ করা হলে শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলেন উপাচার্য।
পরে এর প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। তারা প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এছাড়া ক্লাস-পরীক্ষাও বর্জন করে। দাবি না মানা পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা থেকে বিরত থাকারও ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বক্তব্য প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবি পেশ করে আন্দোলনরতরা।
এরপর বুধবার রাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা ও হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আরো পড়ুন- অনির্দিষ্টকালের জন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা