ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলায় আহত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তরিকুলকে ছাড়পত্র দিয়ে বের করে দিয়েছে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) বিকেলে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়, বলে জানা গেছে।
তরিকুলের সহপাঠীদের অভিযোগ- তিনি এখনও অসুস্থ, ঠিকমতো হাঁটতে পারছেন না। অজানা কারণে তাকে হাসপাল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার (২ জুলাই) বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পতাকা মিছিল করছিল কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে মোট ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন। সে সময় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তরিকুলকে রামদা, হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এতে তার ডান পায়ের হাঁটুর নিচের দুটি হাড় ভেঙে যায় এবং মাথায়ও গুরুতর আঘাতের শিকার হন। পরবর্তীতে, তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
এ প্রসঙ্গে তরিকুলের ছাড়পত্রে স্বাক্ষর করা চিকিৎসক সুব্রত প্রামাণিক বলেন, “তরিকুলকে ২ সপ্তাহের অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। কোনো ধরনের অবিচার করা হয়নি তার সঙ্গে। তার পা প্লাস্টার করে দেওয়া হয়েছে এবং ২ সপ্তাহ পরে আবারও তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।”
অন্যদিকে, আহত তরিকুলের সহপাঠীদের অভিযোগ, “তরিকুলের পায়ে কোনো প্লাস্টার করা হয়নি। দু’দিন পরপর ড্রেসিং করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।” এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী ও সহপাঠী জানিয়েছেন, “তরিকুল এখনও অসুস্থ। সে এপাশ-ওপাশ করতে পারছে না। আমরা ডাক্তারদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম কেন রিলিজ দেওয়া হচ্ছে? কিন্তু, তারা কোনো উত্তর দেননি।”
এদিকে আহত তরিকুল জানিয়েছেন, “আপনারা তো ভিডিওতে দেখেছেন, আমাকে কীভাবে মারধর করা হয়েছে। ওই ঘটনা নিয়ে আর বলতে চাচ্ছি না। কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে । একা হাঁটাচলা করতে পারছি না, এপাশ-ওপাশ করতেও কষ্ট হচ্ছে। ডাক্তার যখন রিলিজ দিচ্ছিলেন, তখন আমি একা ছিলাম। স্যারকে রিলিজ না দেওয়ার অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু, তিনি ১৫ দিন পর আসতে এবং দুই দিন পরপর ড্রেসিং করতে বলেছেন। পরে বিষয়টি আমার সহপাঠীদের জনানোর পর, তারা আমাকে রয়্যাল হাসপাতালে নিয়ে আসে।”
এ ছাড়াও, সকাল ৮টার দিকে পুলিশের তিন সদস্য দায়িত্ব পালনে এসে, একজন তরিকুলকে গ্রেফতার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, তিন পুলিশ সদস্যের একজন বাঁধা দিলে, নিজেদের মধ্যে বাঁকবিতণ্ডা করে চলে যান তারা, এমনটাই জানিয়েছেন আহত তরিকুল।