কুষ্টিয়ায় শহিদ আবরার ফাহাদ স্টেডিয়াম উদ্বোধন করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে অবস্থিত স্টেডিয়ামটি উদ্বোধন করেন তিনি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকিসুদ জাহেদী, যুগ্ম সচিব আমিনুল রহমান, আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. তৌফিকুর রহমান, কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান প্রমুখ।
এরপর এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসিফ মাহমুদ বলেন, “জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে এ দেশের তরুণেরা জীবন দেওয়ার প্রেরণা পেয়েছে আবরার ফাহাদ থেকে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আগ্রাসন থেকে মুক্তির জন্য এ দেশের তরুণেরা ঝাঁকে ঝাঁকে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রাজপথে। এবং অবশেষে আমরা আগ্রাসী পরাশক্তির বাংলাদেশীয় সবচেয়ে বড় খুঁটি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ থেকে পালাতে বাধ্য করতে সক্ষম হয়েছি।”
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত কুষ্টিয়া স্টেডিয়ামটি ২০২০ সালে নাম পরিবর্তন করে করা হয় শেখ কামাল স্টেডিয়াম। এরপর পুরনো স্টেডিয়াম ভেঙে ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় দৃষ্টিনন্দন স্টেডিয়াম। পরবর্তী সময়ে গতবছর নভেম্বরে স্টেডিয়ামকে নতুন নামে নামকরণ করে বুয়েট ছাত্র শহিদ আবরার ফাহাদ স্টেডিয়াম করে সরকার।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অসম চুক্তি এবং পানি আগ্রাসন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। দায়ের হয় হত্যা মামলা। ওই মামলায় সব মিলিয়ে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আবরার ফাহাদ ১৯৯৮ সালে ১২ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের রায়ডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মো. বরকত উল্লাহ এবং মায়ের নাম রোকেয়া খাতুন। আবরার কুষ্টিয়া মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা এবং পরে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে পড়াশোনা করেন। নটরডেম কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা শেষে আবরার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। পড়াশোনা চালাকালীন তাকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বর্তমান বুয়েটে মেকানিক্যাল বিভাগে অধ্যায়নরত।