Friday, April 25, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

সাবেক এমপির বাড়িকে আশ্রম বানানো হলো না ‘সমন্বয়কের’, দখলমুক্ত করলো যৌথবাহিনী

বাড়িটিতে ‘মানসিক ভারসাম্যহীনদের’ জন্য আশ্রম বানাবেন বলে জানিয়েছিলেন মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি

আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৭ এএম

টাঙ্গাইলে যৌথবাহিনীর অভিযানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহেরের বাড়ি দখলমুক্ত করা হয়েছে।

শনিবার (৮ মার্চ) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে শহরের ছোট কালিবাড়ীর এলাকার বাড়িটি থেকে “মানসিক ভারসাম্যহীনদের” বের করে নেওয়া হয়। তাদের সন্তোষ বড়ইতলায় এলাকায় একটি বাসায় রাখা হয়েছে।

সদর উপজেলা সহকারী কমিমনার (ভূমি) রুহুল আমিন শরিফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এর আগে, শনিবার সকালে টাঙ্গাইল সদরের ছোট কালিবাড়ি এলাকায় অবস্থিত বাড়িটির প্রধান ফটকের তালা ভেঙে একদল ব্যক্তিকে নিয়ে সেখানে প্রবেশ করেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তৎকালীন সমন্বয়ক মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি। ওই ব্যক্তিরা সবাই মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করেন মিষ্টি। বাড়িটিতে মানসিক ভারসম্যহীনদের জন্য আশ্রম তৈরি করেবন বলেও দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে শনিবার সকালে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “ফেসবুকে পূর্বঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সব নেতাদের বাড়িতে পাগলদের আশ্রম গড়ে তোলা হবে। তাই আজ সকালে এসে তালা ভেঙে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের বাসায় প্রবেশ করেছি। এখানে আল মুকাদ্দাস ফাউন্ডেশনের ২০ জন পাগলদের রাখা হয়েছে।”

এদিকে, এভাবে বাড়িটি দখলের খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এতে নড়চড়ে বসে প্রশাসন। পরে রাতে অভিযান চালিয়ে ওই ব্যক্তিদের বের করে আনা হয়।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন শরিফ বলেন, “১৭ জন মানসিক ভারসাম্যহীনদের উদ্ধার করা হয়। সমাজসেবাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে তাদের পুনর্বাসন করা হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের ২০১৮ সালে টাঙ্গাইল ৮ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বা চিত হয়েছিলেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। গত ৬ ফেব্রয়ারি বাড়িটিতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। তারপর থেকে বাড়িটিতে আর কোনো লোক দেখা যায়নি। তবে প্রধান ফটকে তালা দেওয়া ছিল।

সেই সময়ের ঘটনা উল্লেখ করে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি বলেন, “জেয়াহেরুল ইসলামের পক্ষ থেকে একজন লোক এসে বাড়িটি না ভেঙে আশ্রমের বানানোর প্রস্তাব দিয়েছিল।”

তবে কোন ব্যক্তি এমন প্রস্তাব দিয়েছিলেন তার নাম জানাতে পারেননি মিষ্টি।

তবে জোয়াহেরুল ইসলামের স্ত্রী রওশন আরা মোবাইল ফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, “আমাদের কাছে প্রথমে মিষ্টি নামের এক মেয়ে ১০ কোটি টাকা চাঁদা চেয়েছিল। সেই টাকা না দেয়ায় তারা বাড়ি জবরদখল করেছে। আমি এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করব।”

তিনি আরও বলেন, “বাড়িটি আমার নামে, আমার স্বামীর নামে নয়। আমি এ ঘটনায় সঠিক বিচারের দাবি করছি।”

এদিকে, জুলাই আন্দোলন চলাকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়ক হিসেবে মিষ্টির নাম থাকলেও গতবছরের ২২ অক্টোবর কেন্দ্রীয়ভাবে সারাদেশের সমন্বয়ক টিম বিলুপ্ত করা হয়। পরে টাঙ্গাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যে কমিটি গঠন করা হয়েছে সেখানে জায়গা হয়নি মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টির। তিনি নিজেকে বর্তমানে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে দাবি করেছেন।

অন্যদিকে, আন্দোলনকালীন সমন্বয়ক টিমে থাকা কারো কোনো কর্মকাণ্ডের দায়ভার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বর্তমান কমিটির নেবে না বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব সেজান আহমেদ বলেন, “তার এমন দায়ভার সংগঠন বহন করবে না। বর্তমানে তিনি আমাদের কমিটির সদস্য নন।”

   

About

Popular Links

x