Tuesday, April 22, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

ধর্ষণের বিচারের দাবিতে দিনভর বিক্ষোভে উত্তাল জাবি

বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন

আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২৫, ০৫:০৭ পিএম

ধর্ষণের দ্রুত বিচার ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে দিনভর বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনে উত্তাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)।

রবিবার (৯ মার্চ) দুপুর দুইটার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক শহিদ মিনারের পাদদেশে একটি প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।

একই সময় চারুকলা বিভাগ, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহিদ মিনারে এসে তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মসূচিতে অংশ নেয়।

পরে সমাবেশ শেষে শহিদ মিনারের পাদদেশ সংলগ্ন সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।

বক্তারা জানান, সম্প্রতি দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে মাগুরায় আট বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে হাসপাতালে রয়েছে। একের পর দেশে নারী ধর্ষণের মতো ঘটনায় চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। যার দায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। তাই অবিলম্বে তার পদত্যাগ ও ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করা উচিত।

ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ গঠন

রবিবার দুপুরে “ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ” শীর্ষক প্লাটফর্মের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এ প্লাটফর্মের শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত মঞ্চ থেকে নিয়মিত কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।

কমিটিতে মুখপাত্র হিসেবে রয়েছেন, সৈয়দা মেহের আফরোজ শাঁওলি এবং সহ-মুখপাত্র ফাহমিদা ফাইজা ও মালিহা নামলাহ।

ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের মুখপাত্র সৈয়দা মেহের আফরোজ শাঁওলি বলেন, “আজকে নতুন বাংলাদেশে আমাদের এরকম একটি জায়গায় দাঁড়াতে হচ্ছে এটা আসলে লজ্জাজনক। তবুও এ লজ্জা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। দেশে একের পর এক ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি ঘটে যাচ্ছে কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী  কোনোভাবেই সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।

তিনি আরও বলেন, “একজন নারীর যে নিরাপত্তা সেটার জন্য আমাদেরকে রাস্তায় নামতে হচ্ছে, এই নতুন বাংলাদেশে। এছাড়াও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিভিন্ন সময়ে যেসব কথা বলে যাচ্ছেন সেসব কথা নারীর নিরাপত্তার পক্ষে না।”

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ

এদিকে, শনিবার মধ্যরাতে সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিতের দাবি জানান তারা।

শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। প্রায় আধাঘণ্টা বিক্ষোভ শেষে রাত তিনটার দিকে অবরোধ তুলে নেন তারা।

এসময় তারা “জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস”, “হলে হলে খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে”, “চব্বিশের বাংলায় ধর্ষকদের ঠাই নাই” সহ একাধিক স্লোগান দেন।

এর আগে, রাত দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ রফিক-জব্বার হল এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে ছাত্রীদের হলের সামনে দিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যায়। এসময় আট থেকে ১০টি হলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে অংশ নেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতী বলেন, “গত কয়েকদিন যাবত দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের নৃশংস ঘটনা ঘটলেও সরকারের ভূমিকা নিরব। গতকাল আট বছরের নিরীহ শিশু ধর্ষিত হয়েছে। আজকে গাজীপুরে আবার শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।  আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে আমরা স্বরাষ্ট্র  উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে কঠোর কর্মসূচি দিব এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ব্লক করে দিব।”

রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুজ্জামান বলেন, “২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে জনগণ যে স্বপ্ন নিয়ে রক্ত দিয়েছিল, জীবন দিয়েছিল; সে স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। অন্তবর্তীকালীন সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারেনি। সারাদেশে ছিনতাই, ডাকাতি বেড়েই চলেছে। দেশে একের পর এক ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”

 

 

   

About

Popular Links

x