নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় ছুরিকাঘাতে অপূর্ব (২২) নামের এক ছাত্রদল কর্মীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় একজনকে পিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন স্থানীয়রা।
রবিবার (৯ মার্চ) রাতে সোয়া ১০টার দিকে শহরের চাষাঢ়ায় শহিদ মিনারের পাশে ভাষা সৈনিক সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাসির আহমদ।
নিহত মো. অপূর্ব (২৫) নগরের মাসদাইর এলাকার মোহাম্মদ খোকনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন পোশাক শ্রমিক ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুল ইসলাম রাজীব বলেন, “রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের মাসদাইরে কেন্দ্রীয় ঈদগাঁহ থেকে ধর্ষণবিরোধী মশাল মিছিল বের হয়। আমাদের মিছিল শহরের চাষাঢ়ায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। ওই মিছিলে অপূর্ব আমার পেছনে ছিল। মিছিল শেষে আমরা নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের দিকে যাচ্ছিলাম। তখন বালুর মাঠ এলাকায় একটি চায়ের দোকানের সামনে কয়েকজন যুবক একজন বৃদ্ধের সঙ্গে ঝগড়া করছিল। বিষয়টি দেখে অপূর্ব তাদের থামাতে যায়। এ সময় ওই যুবকদের মধ্যে থেকে একজন তার বুকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় হামলাকারীদের একজনকে উত্তম মধ্যম দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয় জনতা। আর আহত অপূর্বকে খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”
নিহত অপূর্বের বাবা খোকন মিয়া বলেন, “আমার ছেলে বিএনপির মিছিলে যোগ দিতে এখানে এসেছিল। সে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। এছাড়া আমার ছেলে একজন গার্মেন্টস শ্রমিক। তার হত্যার বিচার চাই।”
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, “নিহত অপূর্ব আমাদের দলের রাজনীতি করে। ধর্ষণবিরোধী মশাল মিছিল শেষে এ ঘটনা ঘটেছে। আটক ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসল অপরাধীদের তথ্য বেরিয়ে আসবে।”
এদিকে আটক সম্রাট হোসেন (২০) শহরের গলাচিপা এলাকার বাসিন্দা। তিনি ভাষা সৈনিক সড়কের একটি খাবারের দোকানে চাকরি করেন। আটকের সময় তার কাছ থেকে একটি ছুরি উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
অভিযোগ অস্বীকার করে সম্রাট বলেন, “আমি কাউকে মারিনি। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। প্রতিদিনের মতো ওই রাতে আমি কাজ শেষ করে বাসায় ফেরার পথে কয়েকজন যুবক আমাকে আটকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে তারা আমাকে মারধর করে নিচে ফেলে দেয়। এরপর কীভাবে কী হয়েছে আমি কিছু জানি না।”
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ নাসির আহমদ বলেন, “তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সম্রাট নামে একজনকে আটক রয়েছে।”
নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী বলেন, “রাতে কাটাকাটির একপর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজন আটক রয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”