এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার পদবি লিখতে পারবে না বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে পাঁচ দফার সবগুলো মেনে না নেওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন আন্দোলনরত চিকিৎসকরা।
তাদের দাবি, চিকিৎসকদের প্রতিটি দাবিই যৌক্তিক এবং বাস্তবসম্মত। তারা এখন ডাক্তার না লিখলেও স্বাধীনভাবে আগের মতোই প্রাইভেট প্র্যাকটিস করে যাবে। এটি আমরা মেনে নেব না।
বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে হাইকোর্টের রায় পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থানরত চিকিৎসকরা এ কথা বলেন।
ডা. হাবিবুর রহমান সোহাগ বলেন, “আমাদের ৫ দফার এক দফা পূরণ হয়েছে। ৫ দফা আদায় করতেই হবে। আপনারা কেউ চলে যাবেন না। আমরা এখান থেকে বাকি চার দফার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করব। আমাদের বাকি দফাগুলোর সমাধান না হলে আমরা ঘরে ফিরে যাব না।”
এদিন রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বেলা ১১টা থেকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন চিকিৎসকরা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এ কর্মসূচিতে চিকিৎসক এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীরা যোগ দেন।
চিকিৎসকদের পাঁচ দফা দাবি
১. এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া অন্য কেউ নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না। আদালতে চলমান এ সংক্রান্ত আইন ও জনস্বাস্থ্য বিরোধী সব রিট আবেদন আগামী ১২ মার্চের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে এবং বাংলাদেশে ‘ডিপ্লোমা চিকিৎসক’ নামে বিভ্রান্তিকর কোনো পদবির প্রচলন করা যাবে না, যার অস্তিত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা বিশ্বের কোথাও নেই।
২. ‘রেজিস্টার্ড চিকিৎসক (এমবিবিএস /বিডিএস) ছাড়া অন্য কেউ স্বাধীনভাবে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবে না’ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
৩. আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট কোর্স কারিকুলাম সংস্কার কমিটি গঠন করে তাদের কোর্স কারিকুলাম পুনর্নির্ধারণ এবং মানহীন সকল ম্যাটস (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বন্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
৪. জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের জন্য শূন্যপদে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক নিয়োগ এবং চিকিৎসকদের বিসিএসের বয়সসীমা ৩৪ বছরে উন্নীত করতে হবে।
৫. অবিলম্বে চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের জন্য সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো (পে-স্কেল) তৈরি করতে হবে।
অপরদিকে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) শিক্ষার্থীরা সরকারি/বেসরকারি পর্যায়ে নতুন পদ তৈরি, অবিলম্বে দশম গ্রেডে শুন্য পদে নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছে।
পাশাপাশি তারা চার বছরের অ্যাকাডেমিক কোর্স বহাল রেখে কারিকুলাম সংশোধন ও ভাতাসহ এক বছরের ইন্টার্নশিপ, প্রস্তাবিত “অ্যালায়েড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড” বাতিল করে “মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ” নামে বোর্ড গঠন এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও বিএমঅ্যান্ডডিসি স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষার সুযোগের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন।