সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় নিজ বাড়িতে যাওয়ার জন্য একটি অটোরিকশায় ওঠে এক কিশোরী (১৬)। পরে তাকে ভুল পথে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠেছে। পরে ওই কিশোরী লাফ দিয়ে অটোরিকশা থেকে নেমে নিজেকে রক্ষা করেছে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ সন্ধ্যায়) এই ঘটনায় আহত মেয়েটিকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার ডান চোখ, কপাল, গাল, হাত থেঁতলে গেছে।
শুক্রবার দুপুর ৩টার দিকে ওই এলাকার একজন শিক্ষক গণমাধ্যম প্রথম আলোকে বিষয়টি জানান। মেয়েটির বরাত দিয়ে হাসপাতালের দায়িত্বরত নার্স জানান, কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মেয়েটি জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে কাপড় কেনার জন্য সঙ্গে দুজনকে নিয়ে দিরাই পৌর শহরে আসে সে। অন্য দুজনের কেনাকাটা শেষ হওয়ায় তারা আগেই বাড়ি চলে যায়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মেয়েটি কেনাকাটা শেষে বাড়িতে যাওয়ার জন্য দিরাই বাসস্ট্যান্ডে যায় লেগুনার জন্য। সেখানে তখন মানুষের ভিড় বেশি ছিল। তখন বাড়ি যাওয়ার জন্য অটোরিকশা ভাড়া করে মেয়েটি।
মেয়েটি আরও জানায়, অটোরিকশায় ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আরও দুই তরুণ (১৮-২০ বছর বয়স হবে) ওই এলাকায় যাওয়ার কথা বলে দুই দিক থেকে ওঠে পড়েন। এরপরই চালক অটোরিকশা চালিয়ে দেন। কিছু দূর যাওয়ার পরই মেয়েটি দেখতে পায়, অটোরিকশা সুনামগঞ্জ শহরের দিকে যাচ্ছে। তখনই অটোরিকশা থামাতে বলে চালককে। এ কথা বলার পরই পাশে থাকা দুজন তাকে ঝাপটে মুখ চেপে ধরেন। মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। তখন মেয়েটি তাদের সঙ্গে ধস্তাধাস্তি শুরু করে। একপর্যায়ে অটোরিকশা দিরাই-মদনপুর সড়কের গণিগঞ্জ এলাকায় আসে। এসময় জোরে ধাক্কা দিয়ে ওই দুই তরুণকে কোনো রকমে ছাড়িয়ে মেয়েটি চলন্ত অটোরিকশা থেকে লাফ দিয়ে রাস্তায় পড়ে। এরপর অটোরিকশা দ্রুত সেখান থেকে চলে যায়।
মেয়েটির বাবা জানান, সন্ধ্যা হওয়ার পরও তার মেয়ে বাড়ি না ফেরায় তিনি মোবাইল ফোনে কল করেন, কিন্তু যোগাযোগ হচ্ছিল না। রাত ৯টার দিকে এক আত্মীয় ঢাকা থেকে কল করে জানান, মেয়েটিকে দিরাই-মদনপুর সড়কের গণিগঞ্জ এলাকায় আহত অবস্থায় সড়কের পাশে পাওয়া গেছে। এরপর তারা গিয়ে মেয়েকে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। রাত ১১টায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মেয়েটি রাস্তায় অনেকক্ষণ অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে ছিল। কেউ তাকে উদ্ধার করেনি। একপর্যায়ে জ্ঞান ফেরার পর যখন সে ঘটনা ও ঠিকানা জানায়, তখনই তাকে একজনের বাড়িতে নেওয়া হয়।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘‘আমাদের কেউ ঘটনা আগে জানায়নি। শুক্রবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে সুনামগঞ্জ শহর থেকে একজন শিক্ষক মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন। আমরা ঘটনার বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।’’
পরে রাত পৌনে ৯টায় সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ইমন খানকে (২৫) নামে এক অটোরিকশাসহ চালককে আটক করা হয়েছে।