গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় সাবিনা ইয়াসমিন (২৯) নামে এক নারী পোশাক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাঘের বাজার গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস লিমিটিড কারখানার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় আড়াই ঘন্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে পুলিশ তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে শ্রমিক ও স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ৬ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকার গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস লিমিটিডে পোশাক কারখানার শ্রমিক সাবিনা ইয়াসমিন ইফতার বিরতির পর কারখানায় আসছিলেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে কারখানার সামনে এসে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ঢাকাগামী দ্রুত গতির একটি প্রাইভেটকার তাকে ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে, ওই নারী শ্রমিকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রাসহ তার সহকর্মীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। উত্তেজিত শ্রমিক ও জনতা কারখানা ভাংচুরের চেষ্টা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের মাধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় শ্রমিকরা বেশ কয়েকটি গাড়ির কাঁচ ভাঙচুর করলে কয়েক যাত্রী আহত হন। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এতে পুলিশের ৬ সদস্যসহ অন্তত ১০জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও লাঠিচার্জ করে অবরোধকারী শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে প্রায় আড়াই ঘন্টা পর যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
সালনা হাইওয়ে থানার ইনচার্জ সালেহ আহমেদ জানান, প্রাইভেটকারের ধাক্কায় এক নারী পোশাক শ্রমিক নিহত হওয়ার জেরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় আড়াই ঘন্টা অবরোধ করে রাখে। এসময় বহিরাগতরা সুযোগ নিয়ে কারখানায় ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। পুলিশ বাঁধা দিলে তারা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ৬ পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়।