Sunday, April 20, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

ইতিহাসের সাক্ষী ‘গলাকাটা মসজিদ’

ইতিহাস বলছে, ৮০০ হিজরি সনের স্থাপত্যশৈলীর সঙ্গে ‘গলাকাটা মসজিদের সাদৃশ্য রয়েছে

আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৩:৪৩ পিএম

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজারে রয়েছে মোগল ও সুলতানি আমলের বেশকিছু নিদর্শন। তার মধ্যে ইতিহাসের সাক্ষী “গলাকাটা মসজিদ”। ইতিহাস বলছে, ৮০০ হিজরি সনের স্থাপত্যশৈলীর সঙ্গে “গলাকাটা মসজিদের” সাদৃশ্য রয়েছে।

গলাকাটা মসজিদের অবস্থান

বারোবাজার থেকে তাহেরপুর যাওয়ার রাস্তার পাশেই মাঝারি আকৃতির ছয় গম্বুজ বিশিষ্ট এ মসজিদটি অবস্থিত। মসজিদটির পাশেই একটা বড় দিঘি। স্থানীয়দের কাছে দিঘিটি “গলাকাটা দিঘি” নামেই অধিক পরিচিত। স্থানীয়দের মিঠাপানির অন্যতম উৎস হিসেবে কালের সাক্ষী হয়ে দিঘিটি আজও টিকে রয়েছে সমহিমায়।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা আফসার আলী (৭১), আবু তাহের (৭৪) ও রওশন আলী (৭৩) জানান, হযরত খানজাহান আলী ধর্মপ্রচারে বাগেরহাট-খুলনা অঞ্চলে আগমন করেন। ওই সময় বারোবাজার অঞ্চলে খানজাহান আলীর শিষ্যরা মসজিদ ও দিঘি তৈরি করেছেন। মসজিদগুলোর নামের সঙ্গে মিল রেখেই দিঘির নাম দিয়েছেন এলাকাবাসী।

তবে এ মসজিদটির নাম কেন “গলাকাটা মসজিদ” হলো তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও ঐতিহাসিক ভাবেও নামকরণ নিয়ে তেমন কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য মেলেনি। যদিও স্থানীয়দের কাছে নামকরণ নিয়ে নানা গল্প-কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। তবে এসব গল্প-কাহিনীর কোনো সত্যতা ও নির্ভরযোগ্যতা পাওয়া যায়নি।

গলাকাটা মসজিদের বৈশিষ্ট্য

পোড়ামাটির ইট দিয়ে তৈরি মসজিদটির চুন-সুরকির গাঁথুনিতে নির্মিত। এতে মোট চারটি ৬ কোণ বিশিষ্ট বড় স্তম্ভ রয়েছে। এ স্তম্ভের ওপর বর্গাকৃতির ছাদ বসানো। মসজিদটির প্রতিটি দেয়াল ৫ ফুট প্রস্থ। প্রতিটি দেয়াল ২৫ফুট  লম্বা। মসজিদটি বর্গাকার। এতে রয়েছে ৩টি দরজা। মাঝখানের দরজাটি আকারে কিছুটা বড়।

মসজিদের পশ্চিমপাশের দেয়ালে তিনটি মেহরাব রয়েছে। মেহরাবগুলোতে পবিত্র কোরআন, তসবিহ, টুপি রাখা হয়। মেহরাবগুলো পোড়ামাটির কারুকাজে সমৃদ্ধ। মসজিদের ভিতরে কালো রঙের দুটি বড় পিলার বা স্তম্ভ রয়েছে। এ স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে ছাদ ও ৬টি মাঝারি আকৃতির গম্বুজ।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শাহ সুলতান মাহমুদ এর আমলে উঁচু মাটির ঢিবি দেখে তা খননের নির্দেশ দেওয়া হয়। খননের পরে আরবি ও ফার্সিতে লেখা কিছু খোদাইকৃত পাথর আবিষ্কার করা হয়। ধারণা করা হয়, খোদাইকৃত পাথরগুলো ৮০০ হিজরি সনের। দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদের স্থাপত্য শৈলীর সঙ্গে ঢাকার বাবা আদমের মসজিদ এবং বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদের  মিল রয়েছে।

বারোবাজার থেকে তাহেরপুর যাওয়ার পথে রাস্তার বাম পাশেই দৃষ্টিনন্দন মসজিদটির অবস্থান। বারোবাজার থেকে ভ্যান, অটোরিকশা ও ইজিবাইকে চেপে খুব সহজেই মসজিদে পৌঁছানো সম্ভব।

   

About

Popular Links

x