দেশের সংস্কৃতির বাতিঘর হয়ে জীবনভর তিনি ছড়িয়ে গেছেন আলো, ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সভাপতি সন্জীদা খাতুন তার দেহও দান করে গেছেন অঙ্গ প্রতিস্থাপন আর গবেষণার জন্য।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সন্জীদা খাতুনের মরদেহ বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (পিজি) দান করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ছেলে পার্থ তানভীর নভেদ।
পার্থ তানভীর বলেন, “বেলা ১১টার দিকে মরদেহ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের কল্যাণে নিজের শরীর দানের সিদ্ধান্তটি সন্জীদা খাতুন ১৯৯৮ সালে নিয়েছিলেন।”
মরদেহ দানের সময় সন্জীদা খাতুনের ছেলে পার্থ তানভীর নভেদ, ছোট মেয়ে রুচিরা তাবাসসুম নভেদ, বড় মেয়ের স্বামী সাংবাদিক নিয়াজ মোরশেদ কাদেরী এবং ছোট মেয়ের দেবর অধ্যাপক মানজারে শামীম উপস্থিত ছিলেন।
পার্থ তানভীর নভেদ সংবাদামাধ্যমকে জানান, চিকিৎসাবিজ্ঞানের কল্যাণে নিজের শরীর দানের সিদ্ধান্তটি তার মা ১৯৯৮ সালে নিয়েছিলেন। এ বিষয়ে তখন একটি চুক্তিও করেছিলেন সন্জীদা খাতুন। সেই চুক্তি তিনি খামে ভরে রেখে দিয়েছিলেন।
তার মৃত্যুর পর গতকাল সেই খাম বের করা হয়েছে জানিয়ে পার্থ তানভীর নভেদ বলেন, “১৯৯৮ সালে চুক্তির সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মানজারে শামীম। আজ মরদেহ হস্তান্তরের সময়ও তিনি উপস্থিত ছিলেন।”
রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে মারা যান তিনি। সেদিন রাতে সন্জীদা খাতুনের মরদেহ হিমঘরে রাখা হয়, বুধবার দুপুরে তার কফিন নেওয়া হয় ছায়ানট ভবনে। সেখানে গানে গানে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান ছায়ানটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সেখান থেকে সন্জীদা খাতুনের মরদেহ নেওয়া হয় তার সাবেক কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। তারপর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে তাকে শেষ বিদায় জানান শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী ও সর্বস্তরের মানুষ।
এরপর বুধবার রাতে মরদেহ রাখা হয় হাসপাতালের হিমঘরে। বৃহস্পতিবার পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে গিয়ে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।