Tuesday, May 13, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে পোশাকশ্রমিকের আত্মহত্যা

তিনি পোস্টে ‍লিখেন, ‘আমি অনেক কষ্ট পাইছি, এই পৃথিবীতে মানুষ বড় নিষ্ঠুর’

আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৫ পিএম

গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানার কার্টন সেকশনের অপারেটর ইদ্রিস আলী কর্তৃপক্ষের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর কারখানাটিতে ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

ইদ্রিস আলী তার পোস্টে লিখেছেন, “মণ্ডল গ্রুপের মন্ট্রিমস্ লিমিটেডে এক বছর যাবত চাকরি করি। কিছু লোক আসার তিন মাস বা ছয় মাস হলেই তাদেরকে স্থায়ী করে। আমাকে করে না। কারণ হচ্ছে আমরা মেশিনের লোক। একদিন ৬টায় গিয়েছিলাম। তার জন্য আমার বিচার করেছে, আমি কি অপরাধ করছি। তাদের জন্য আমার জীবন শেষ করে দেব। এর জন্য দায়ী আমাদের সেকশনের কামরুল স্যার এবং ম্যানেজার হারুন স্যার। ওরা মানুষকে মানুষ মনে করে না। তারা মনে করে ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির তৈরি। আমি আজকে সুইসাইড করব। এদের নিয়মে আমি অনেক কষ্ট পাইছি। এই পৃথিবীতে মানুষ বড় নিষ্ঠুর। আপনারা এর বিচার করবেন।”

মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী (২৩) কালিয়াকৈর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় সপরিবারে ভাড়া বাসায় থেকে কারখানার কাজ করতেন।

কারখানা বেশ কয়েকজন শ্রমিক স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, ইদ্রিস আলী অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তার চাকরির এক বছর হয়ে গেলেও তাকে এখনও স্থায়ী করেনি কর্তৃপক্ষ। তাকে স্থায়ী করার জন্য যখনই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গেছেন তখনই তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। এছাড়া তিনি বিভিন্ন বিষয়ে বেশ কিছুদিন যাবত হতাশায় ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর কোনো এক সময়ে ইদ্রিস আলী কারখানার ভেতরে কেমিকেল খায়। পরে তাকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের বোনজামাই বাবু বলেন, “ইদ্রিস আলী অনেকদিন পোশাক কারখানায় কাজ করেন। ওর সঙ্গের সবাইকে চাকরিতে পার্মানেন্ট করলেও কর্তৃপক্ষ ওকে করেনি। অসুস্থ থাকার কারণে একদিন ৬টায় কারখানা হতে বের হয়। এজন্য পরের দিন প্ল্যানিং সেকশনের কামরুল এবং ম্যানেজার হারুন তাকে রুমে ডেকে নিয়ে বকাঝকা করেন। পরে দুঃখ যন্ত্রণায় ইদ্রিস আত্মহত্যা করেছেন।”

মন্ট্রিমস্ লিমিটেডের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, “কারখানার একজন শ্রমিক বিষ জাতীয় কিছু খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।”

কেন বা কি কারণে জানতে চাইলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি আর ধরেননি।

কালিয়াকৈর থানার পরিদর্শক (এসআই) যোবায়ের বলেন, “বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এক শ্রমিক কারখানার ভেতরেই বিষাক্ত কিছু খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

   

About

Popular Links

x