বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে “মার্চ টু যমুনা” কর্মসূচি পালন করছেন পোশাকশ্রমিকরা। মিছিল নিয়ে যমুনা অভিমুখে যাওয়ার সময় পুলিশের বাধার মুখে পড়ে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুর ৩টার দিকে পুলিশের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থান নেন পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠান টিএনজেড গ্রুপের শতাধিক শ্রমিক।
এর আগে, দুপুর আড়াইটার দিকে জাতীয় শ্রম ভবনের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে শ্রমিকরা কাকরাইল মোড় হয়ে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনের দিকে অগ্রসর হন। ৩টার দিকে তারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন এবং সেখানেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে কাকরাইল মোড়ে এসে ১৮ মাস আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া ডার্ড গ্রুপের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি মোতাবেক শ্রমিক-কর্মচারীদের সব পাওনা পরিশোধের দাবি জানান।
এসময় শ্রমিকরা “বেতন চাই, বোনাস চাই, চূড়ান্ত হিসাব আজই চাই”, “১৪ মাসের ঘাম কোথায়, টিএনজেড জবাব চাই”, “মেহনতি মানুষের ঘাম, বৃথা যেতে পারে না”, “আমরা চাই না দয়া, চাই ন্যায্য পাওনা” স্লোগান দিতে থাকেন।
এরও আগে, সকাল ৯টার দিক থেকেই শ্রমিকরা জাতীয় শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
মঙ্গলবারও রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনের সামনে আন্দোলনরত শ্রমিকদের বাধায় কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল সোমবারের মতো সকাল ৯টার দিক থেকেই শ্রম ভবনের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়েছেন স্টাইল ক্রাফট ও ইয়াং ওয়ান্স বিডির শ্রমিকরা।
স্টাইল ক্রাফটের শ্রমিক নেতা রাজু আহমেদ বলেন, “গতকাল আমরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু এখনও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এজন্য আজও শ্রম ভবনে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছি না।”
তিনি বলেন, “টিএনজেড গ্রুপের ১,০৫৮ জন শ্রমিকের ১৪ মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস মিলিয়ে মোট ২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। এসব পাওনা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
শ্রমিক নেতা শহীদুল ইসলাম বলেন, “রমজানের ঈদের আগে আমাদের ১৭ কোটি টাকা পাওনার যায়গায় শ্রম সচিব ৩ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেওয়া হয় মাত্র ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এটা আমাদের সঙ্গে প্রতারণা।”
তিনি আরও বলেন, “দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজকের ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি চূড়ান্ত আন্দোলনের অংশ। দাবি পূরণ না হলে আমরা ফিরে যাব না।”
এদিকে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনকে কেন্দ্র করে কাকরাইল ও এর আশপাশের যেকোনো ধরনের আন্দোলন ও বিক্ষোভ মিছিল নিষিদ্ধ। তবে তারা যে আন্দোলনে এখানে এসেছেন, তাতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। তবে তারা যদি কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন কিংবা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন, তাহলে তাদের প্রতিহত করা হবে।”