“নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে, তিল ঠাঁই আর নাহি রে। ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে”- কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই কবিতাটি যেন আজ বাস্তব হয়ে উঠেছিল রাজধানী ঢাকার বুকে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালের মৌসুমি বৃষ্টিতে ঢাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে কবির বারণ শোনাটাই শ্রেয়।
গত কয়েক দিনে তীব্র দাবদাহে যান্ত্রিক এই শহরটির মানুষ চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করছিল বৃষ্টির। প্রকৃতি সেই ডাকে সাড়াও দিয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে নেমে আসে বৃষ্টি।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বৃষ্টি ঝরেছে অনবরত। এই বৃষ্টি একদিকে প্রখর তাপদাহের শেষে এনে দিয়েছে এক চিলতে প্রশান্তি, অন্যদিকে রচনা করেছে দুর্ভোগের এক নতুন অধ্যায়।
বৃষ্টির সময়টাতে নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো তলিয়ে যায় জলে, ধীর হয়ে যায় যান চলাচল। পায়ের নিচে জল, কাঁধে ক্লান্তি আর চোখে প্রতীক্ষা নিয়ে এ সময় অফিসগামী মানুষজনকে দেখা বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
সকালবেলা ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে থেমে গেছে যানবাহনের গতি। রিকশানগরী খ্যাত ঢাকায় রাস্তায় দেখা যায়, জলে অর্ধেক ডুবে আছে রিকশা, চালানো হয়ে উঠছে মুশকিল।
আর পথচারীরা ছুটে বেড়াচ্ছেন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। অনেকেই ছাতা হাতে কিংবা ব্যাগ মাথায় দিয়ে এগিয়ে চলেছেন সেই গন্তব্যে, যেখানে না গেলেই নয়।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে ঢাকায় ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, “দিনের আরও কিছু সময় ঢাকায় বৃষ্টি থাকতে পারে, তবে শুক্রবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে।” তবে রাজধানীর বাইরের কিছু জেলায় বৃষ্টিপাত কিছুটা সময় স্থায়ী হতে পারে বলেও জানান তিনি।