কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় টাকা চুরির ঘটনায় গ্রাম্য সালিসে বিচার করায় মাতবরের ১৪ বছর বয়সী ছেলেকে তুলে নিয়ে বিষ পান করানোর পর অণ্ডকোষে অ্যাসিড ঢেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
নিহত কিশোরের নাম হোসাইন। তিনি একই গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে ও স্থানীয় শিকারপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। গুরুতর আহত ওই কিশোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার মারা যান। এ ঘটনায় করা মামলায় প্রধান দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দিবাগত মধ্যরাতে জেলার চান্দিনা উপজেলায় আসামিদের নিকটাত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের সোলাইমানের ছেলে আলাউদ্দিন (২১) ও তার ১৬ বছর বয়সী ছোট ভাই।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই মাস আগে উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের মইনুল হোসেনের মুদি দোকানে ৫০০ টাকা চুরির ঘটনা ঘটে। এতে গ্রেপ্তার ১৬ বছর বয়সী কিশোর জড়িত থাকার অভিযোগ গ্রাম্য সালিসে প্রমাণিত হলে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সালিসে হোসাইনের বাবা আবু তাহের উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি রায় দেওয়ায় যুক্ত ছিলেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৩১ মে গ্রেপ্তার কিশোর ও তার ভাই আলাউদ্দিন নিহত হোসাইনকে রাস্তা থেকে ধরে নির্জন স্থানে নিয়ে বিষ পান করান এবং তার অণ্ডকোষে অ্যাসিড ঢেলে ঝলসে দেন। এরপর থেকে হোসাইন কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বুধবার বিকেলে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে নিহত হোসাইনের মা শাহিনা আক্তার বাদি হয়ে বুড়িচং থানায় দুজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটের চিকিৎসক অরূপ কুমার রায় জানান, বিষক্রিয়ায় শিশুটির গলা ফুলে গিয়েছিল। যার কারণে সে শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। এ ছাড়া তার অণ্ডকোষ ঝলসে গিয়েছিল।
নিহত কিশোরের বাবা আবু তাহের বলেন, “আমি খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমার ছেলেটা তো কোনো অন্যায় করেনি। তাকে কেন এভাবে হত্যা করা হলো।”
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, “শিশু হোসাইন হত্যার ঘটনায় দুজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা হয়। পুলিশ বুধবার মধ্যরাতে চান্দিনা উপজেলায় আসামিদের মামার বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
