ইন্টারনেটের ওপর থেকে ১০ শতাংশ ভ্যাট কমলেও নতুন জটিলতা তৈরি হওয়ার কারণে ‘ইন্টারনেট ব্যবহারের’ খরচ কমার পরিবর্তে বাড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংসদে বাজেট পাসের দিন ইন্টারনেটের ওপর আরোপিত ভ্যাট ১৫ থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে ৫ করা হয়। এই সংবাদে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা আশান্বিত হলেও দুঃসংবাদ শোনালেন ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) ও মোবাইলফোন অপারেটররা। ইন্টারনেট অপারেটররা বলেন, গ্রাহকের ভ্যাট ৫ শতাংশ করা হলেও আইএসপিগুলোর ওপর এনটিটিএন সেবার ১৫ শতাংশ এবং আইআইজির ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) আরোপ করা হয়েছে। এই জটিলতার কারণে ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা ইন্টারনেটের দাম বাড়ানোর কথা শোনালেন। তারা বললেন, এখন যে দামে ইন্টারনেট বিক্রি হচ্ছে, জটিলতা দূর না হলে ইন্টারনেটের দাম অন্তত ২০ শতাংশ বেড়ে যাবে।
অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের রিপোর্টে উঠে এসেছে এই তথ্য।
ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম এ প্রসঙ্গে বলেন, এনটিটিএন ও আইআইজির ভ্যাটের কারণে আমাদের ইন্টারনেট কিনতে খরচ বেড়ে যাবে। ‘কস্ট অব প্রোডাক্ট’ বেড়ে গেলে তা কমদামে বিক্রির কোনও সুযোগ নেই। ফলে আমাদের ইন্টারেনেটের দাম বাড়িয়েই বিক্রি করতে হবে। তবে গ্রাহকের ইন্টারনেট ক্রয়ে ১৫-এর জায়গায় ৫ শতাংশ অর্থ ভ্যাট বাবদ খরচ হবে।
তিনি বলেন, এনবিআর ও অর্থ মন্ত্রণালয় এই সমস্যার সমাধান না করলে দ্রুতই বেড়ে যাবে যাবে ইন্টারনেটের দাম।
জানা যায়, ইন্টারনেটের ভ্যাট ১০ শতাংশ কমে যাওয়ায় এরই মধ্যে কিছু কিছু আইএসপি ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট নিচ্ছে গ্রাহকের কাছ থেকে। কিন্তু মোবাইল ফোন অপারেটররা ইন্টারনেট প্যাকেজ বিক্রির ওপর এখনও ১৫ শতাংশই ভ্যাট নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অ্যামটবের (মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর সংগঠন) যুক্তি হলো, ভ্যাট বিষয়ে এনবিআর যে এসআরও জারি করেছে সেখানে সুনির্দিষ্ট কোড উল্লেখ না করায় অপারেটররা ইন্টারনেটের ভ্যাট ১৫ শতাংশই রাখছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘মোবাইল ফোন অপারেটররা কোনোভাবেই চায় না ইন্টারনেটের ওপর থেকে ভ্যাট কমুক। এই ভ্যাটের টাকা দিয়ে তারা অনেক কিছু করে। যেহেতু এনবিআর একটি এসআরও জারি করেছে এবং তাতে কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। আর এই সুযোগটাই নিয়েছে মোবাইল অপারেটররা।’ মন্ত্রী বলেন,‘আমি মনে করি পরিকল্পিতভাবে এই জটিলতা তৈরি করা হয়েছে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আইএসপির ইন্টারনেটে যে এই জটিলতা রয়েছে তা আমার দৃষ্টিতে কেউ আনেনি। আজই (মঙ্গলবার) মাত্র শুনলাম। আমি আইএসপিএবিকে বলেছি, বিষয়টি লিখিতভাবে জানাতে। লিখিত পেলে আমি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বসে এনটিটিএন-এর ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও আইআইজির ৫ শতাংশ ভ্যাট নিয়ে কথা বলে বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করবো।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এনবিআর-এর সঙ্গে আগামী রবিবার মোবাইল ফোন অপারেটর, আইএসপিসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো বৈঠকে বসবে। বৈঠকে ভ্যাট আইন বিশেষজ্ঞরাও থাকবেন। আশা করা যাচ্ছে, ওই বৈঠকে ইন্টারনেটের ওপর আরোপিত বিষয়গুলোর সুরাহা হবে।