রাজশাহীতে গাছ থেকে আমপাড়ার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। অসময়ে আম সংগ্রহ বন্ধ রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১৫ মে এর আগে কোনো আমপাড়া যাবে না।
শুক্রবার (০৮ মে) জেলা প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চাষিরা গোপালভোগ আমপাড়তে পারবেন ২০ মে থেকে। এছাড়া রানীপছন্দ ও লক্ষণভোগ বা লখনা ২৫ মে, হিমসাগর বা খিরসাপাত ২৮ মে, ল্যাংড়া ৬ জুন, আম্রপালি ১৫ জুন এবং ফজলি ১৫ জুন থেকে পাড়া যাবে। সবার শেষে ১০ জুলাই থেকে পাড়া যাবে আশ্বিনা ও বারী আম-৪।
বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার (০৭ মে) স্বাক্ষর করেছেন জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক। এর আগে গত ১১ জানুয়ারি এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক বলেছিলেন, “মুজিববর্ষে রাজশাহীর বিষমুক্ত আম হবে জাতির জন্য উপহার”। এই বিজ্ঞপ্তিতে জেলা প্রশাসক বলেছেন, “অপরিপক্ব আম বাজারজাত ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে থাকবে প্রশাসন। সুষ্ঠুভাবে মনিটরিং করে নির্দিষ্ট সময়েই আম নামানো হবে।”
এদিকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে আম বাজারজাত করা নিয়ে চাষিদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। তারা আম বিক্রি করতে পারবেন কি না সে চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। তাই অনেকটা অনাদরেই বাগানে বেড়ে উঠছে আম। এ অবস্থায় আমপাড়ার সময় বেঁধে দেওয়ায় চাষিরা আরও ক্ষতির শঙ্কা করছেন।
তবে জেলা প্রশাসন বলছে, কৃষিপণ্য লকডাউনের বাইরে থাকায় চাষিদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। তাছাড়া ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারগুলোকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে কুরিয়ারে আম পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। ইতোমধ্যে সকল উপজেলায় এ ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, “অসময়ে আমপাড়া বন্ধে এবং ক্যালসিয়াম কার্বাইড, পিজিআর, ফরমালিন, ইথিফনের মতো কেমিক্যাল ব্যবহারের মাধ্যমে যেন আম পাকানো না হয় তার জন্য পাড়ার ক্ষেত্রে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং পুলিশ কঠোরভাবে মনিটরিং করবে। তবে আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে কোথাও নির্ধারিত সময়ের আগে গাছে আম পাকলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে চাষিরা আমপাড়তে পারবেন।”
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক শামসুল হক বলেন, “এবার রাজশাহীতে ১৭ হাজার ৫৭৩ হেক্টর জমিতে আমের চাষ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। ফলন অনুযায়ী গড়ে ৩৫ টাকা কেজি দরে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ৭৩৫ কোটি টাকার আম বিক্রি করার সম্ভাবনা রয়েছে।”