বাংলাদেশ টেলিযোগযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) অডিট দাবির এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করতে যাচ্ছে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন (জিপি)।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. হাসান সোমবার ঢাকা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বছরের ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ বিটিআরসির দাবিকৃত ১২,৫৮০ কোটি টাকার মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। এরমাধ্যমে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক বিটিআরসিকে মোট দুই হাজার কোটি টাকা দিতে হচ্ছে গ্রামীণফোনকে।
পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে গ্রামীণফোনের রিভিও পিটিশনের শুনানি শেষে গত ২০ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটিকে তিন দিনের মধ্যে এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপে বিটিআরসিকে এক হাজার কোটি টাকা প্রদান করে গ্রামীণ ফোন।
সোমবার প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, আপিল বিভাগের ২৪ ফেব্রুয়ারি দেয়া রিভিউ পিটিশনের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে অডিট নিষ্পত্তির চূড়ান্ত ফলাফলের সাথে সমন্বয়যোগ্য শেষ কিস্তির এক হাজার কোটি টাকা ৩১ মে’র মধ্যে বিটিআরসিতে জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
অপারেটরটির পক্ষ থেকে বলা হয়, বিটিআরসির নিরীক্ষা ও দাবিটির বৈধতা একটি বিতর্কিত বিষয়। তারা এটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে বাইরে অথবা আদালতে সমাধান করতে আগ্রহী।
গ্রামীণফোন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, তারা এ সম্পর্কিত আদালতের আদেশ পুরোপুরি মেনে চলবে। একই সাথে প্রতিষ্ঠানটি ভবিষ্যত ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া, গ্রাহকসেবার মান উন্নয়ন, ব্যবসায়িক পরিবেশে আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষায় আদালতের সুরক্ষা প্রত্যাশা করে প্রতিষ্ঠানটি।
২০১৬ সালে বিটিআরসি গ্রামীণফোনে নিরীক্ষা (অডিট) করার পর অপারেটরটির কাছে ট্যাক্স ও বিলম্ব ফিসসহ ১২ হজার ৫৭৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা দাবি করে।
অডিট সংক্রান্ত বিরোধটি গত বছর চূড়ান্ত পর্যায়ে ঠেকেছিল। এতে দাবিকৃত অর্থ পরিশোধ না করায় বিটিআরসি থেকে শাস্তি মুখে পড়েছিল গ্রামীণফোন।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা গ্রামীণ ফোনের কাছে ২৭টি সেক্টরে এই পাওয়া দাবি করে। কিন্তু অর্থ আদায়ে তারা ব্যর্থ হয় এবং গত বছরের এপ্রিলে প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দেয়
কিন্তু গ্রামীণ ফোন ওই আদেশের প্রত্যাহার চেয়ে আদালতের শরনাপন্ন হয়। নিম্ন আদালত ২৮ আগস্ট গ্রামীণফোনের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করে দিলে ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন। শুনানি শেষে ১৭ অক্টোবর আদালত আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে টাকা আদায়ের ওপর দুই মাসের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেয়। পরে গ্রামীণফোনের কাছে ওই টাকা দাবি আদায়ের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত চেয়ে বিটিআরসি আপিল বিভাগে আবেদন করে।