Friday, March 21, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

গোপালগঞ্জে প্রতি হেক্টরে ৫ টন ফলন দিয়েছে ‘বিনাধান-১৯’

এ জাতের ধান চাষে সেচ কম লাগে। সার ও কীটনাশক সাশ্রয় হয়

আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২০, ১১:২২ এএম

দুই জেলায় পরীক্ষামূলক আবাদে খরা সহিষ্ণু উচ্চ ফলনশীল আউশ ধানের জাত “বিনাধান-১৯” হেক্টরে ৫ টন ফলন দিয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পাইকেরডাঙ্গা গ্রামের কৃষক শাহ আলম সরদারের জমিতে উৎপাদিত বিনাধান-১৯ জাতের ধান কাটার পর পরিমাপ করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) বিজ্ঞানী ও কৃষি সম্প্রসারণের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।

কৃষি বিশেষজ্ঞরা ঢাকা ট্রিবিউনকে জানান, এ জাতের ধান চাষে সেচ কম লাগে। সার ও কীটনাশক সাশ্রয় হয়। খরা সহিষ্ণু স্বল্প জীবন কালের এ ধান পরিবর্তিত জলবায়ু মোকাবিলা করে বাম্পার ফলন দিয়েছে। 

গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র জানিয়েছে, চলতি আউশ মৌসুমে গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুর জেলার ৩০ একর জমিতে  ৩০টি প্রদর্শনী প্লটে এ ধানের আবাদ করেন কৃষকরা।   

গোপালগঞ্জের পাইকেরডাঙ্গা গ্রামের কৃষক শাহআলম সরদার বলেন, “বিনা উপকেন্দ্র আমাকে বীজ, সার, কীটনাশক বিনামূল্যে দিয়েছে। তাদের পরামর্শে এ জাতের ধান চাষে সেচ সহ অন্যান্য খরচ খুবই কম লেগেছে। গাছ হেলে পড়ে না। প্রচলিত আউশ ধানের তুলনায় এ ধান অনেকগুণ বেশি ফলন দিয়েছে। এ জাতের ধান সরু হওয়ায় বাজারে বেশি দাম পেয়ে বেশি লাভবান হবো বলে আশা করছি।”

আরেক কৃষক ইয়ার আলী সরদার বলেন, “ধানের ফলন দেখে আমার প্রাণ ভরে গেছে। আমি আগামীতে বীজ সংগ্রহ করে এ ধানের চাষাবাদ করবো। আমাদের এলাকায় লাভজনক এ ধানের চাষ সম্প্রসারিত হবে।”

গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলকার নাইন বলেন, “ভবিষ্যতে আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকবিলা। বিষয়টিকে মাথায় রেখেই আমাদের বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন ফসলের জাত উদ্ভাবন করছেন। এসব জাত কৃষকের  হাতে তুলে দিয়ে তাদের পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে উপযোগী করে তুলছি। এরই অংশ হিসেবে খরা সহিষ্ণু উচ্চ ফলনশীল আউশ ধানের জাত বিনাধান-১৯ আবাদ করে কৃষক প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ফলন পেয়েছেন। আমি এ জাতের ধান বীজ বিএডিসিকে উৎপাদন করে কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দিতে অনুরোধ করছি।”

গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম আকন্দ বলেন, ধান চষে পানির অপচয় রোধ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। তাই কম সেচে আউশ মৌসুমের এ ধানের আবাদ সম্প্রসারণ করতে হবে। আমাদের উদ্ভাবিত খরা সহিষ্ণু স্বল্প জীবন কালের এ ধান পরিবর্তিত জলবায়ু মোকাবেলা করে কৃষককে বাম্পার ফলন দিতে সক্ষম। 

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দু কুমার রায় বলেন, বোরো মৌসুমে সেচ কাজে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করা হয়। এতে প্রচুর পরিমানে পানির অপচয় হয়। ফলে পরিবেশে বিপর্যয় নেমে আসার আশংকা রয়েছে। পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবেলায় পানি সাশ্রয়ী আউশ ও আমন মৌসুমের বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদ সম্প্রসারিত করতে সরকার কৃষককে উদ্বুদ্ধ করছে।  এ ধানের আবাদ বাড়লে দেশে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। কৃষক জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুকি মোকাবেলা করে টিকে থাকতে পারবেন। একইসঙ্গে তারা লাভবানও হবেন। 

   

About

Popular Links

x