রাজশাহীতে অব্যাহত রয়েছে মৃদ্যু শৈতপ্রবাহ। দিনের কিছু সময়ের জন্য উঁকি দিচ্ছে সূর্য। অধিকাংশ সময় দেখা মিলছে ঘন কুয়াশার। গত শনিবার (২৩ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে হঠাৎ কুয়াশায় ঢেকে যায় রাজশাহী। কয়েকদিন ধরে কুয়াশার এমন প্রকোপে জনজীবনে যেমন দুর্ভোগ বেড়েছে তেমনি কৃষি আবাদেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে আলু ও বীজতলায় রোগ সংক্রমণের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত রবিবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুর থেকে রোদের দেখা মেলেছে। তবে এদিন রাতে আবার হালকা হালকা কুয়াশা পড়েছে।
রাজশাহী কৃষি অফিসের তথ্য মতে, বেশি ঘনকুয়াশা হলে ও দিনে রোদ না হলে আলুর আবাদ ও বীজ তলায় রোগ সংক্রমণ বেড়ে যায়। করোনাভাইরাসের এমন সময়ে এ বিষয়ে আগে থেকেই তৎপর আছে কৃষি বিভাগ। এ বিষয়ে কৃষকদের আগে থেকেই সাবধান করা হয়েছে।
পবা উপজেলার কৃষক সাবিয়ার আলী জানান, এবার তিনি আড়াই বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার গাছ অনেক ভালোই ছিল। তবে কয়েকদিনের ঘন কুয়াশার কারণে কিছু গাছ কিছুটা নেতিয়ে পড়ছিল। তবে তিনি স্থানীয় ডিলারের পরামর্শে স্প্রে করছেন। এখন আবাদ ভালো আছে।
পবা উপজেলার বড়গাছী ইউনিয়নের খাপারা এলাকার আলুচাষি সুইট জানান, এবার ১৪ বিঘা জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। আলু গাছে রোগবালাই কম দেখা দিয়েছে। তবে শনিবারের মতো কুয়াশা এক সপ্তাহ ধরে থাকলে আলু গাছে রোগবালায়ের আশঙ্কা আছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামছুল হক জানান, কয়েকদিন থেকে ভালোই কুয়াশা পড়ছে। দিনেও রোদের দেখাও তেমন মিলছে না। এ সময়টায় আলুর “নাভিধস’ দেখা যায়। তবে তারা এবার আগে থেকেই তৎপর রয়েছেন। এখন পর্যন্ত এ রকম কোনো কিছু জানা যায়নি। এবং তিনি প্রতিনিয়ত খোঁজ খবর রাখছেন।
তিনি আরও জানান, কুয়াশায় আলু ও বীজতলার কিছু ক্ষতি করে। এখন বীজতলাতেও বাড়তি পরিচর্যার প্রয়োজন। মাঠপর্যায়ে কৃষকদের এ বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, রবিবার (২৪ জানুয়ারি) রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সকাল ৯ টায় ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ২১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমছে।
রাত ১০টার দিকে রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম জানান, রাজশাহীতে শনিবার (২৩ জানুয়ারি) হঠাৎ করে রাত ৮টার দিকে এত ঘন কুয়াশা বা পুরা ফগ দেখা যায়। এর আগে এ সময় এতটা ঘনকুয়াশা দেখা যায়নি। কুয়াশার তীব্রতা আরও ৪-৫ দিন থাকতে পারে বলে জানান তিনি। এছাড়া এদিন সকাল ৯টায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক রাজিব খান জানান, সামনে আবহাওয়া কেমন হবে তা বলা যাচ্ছে না। এ মৌসুমের সর্বোচ্চ কুয়াশা শনিবার দেখা গেছে। যেটা এখন কমবে। রাজশাহীতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের চেয়ে তাপমাত্রা কিছুটা বেশি আছে। এখন মূলত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান ক্রমশ কমতে শুরু করেছে। এ জন্য রাজশাহীসহ আশপাশের অঞ্চলে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।
এর আগে রবিবার (১৭ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ২১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার (১৬ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।