দেনা-পাওনার হিসেব দিতে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালিকে তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। বুধবার (১১ আগস্ট) বিকেলে ইভ্যালির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রথম বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. হাফিজুর রহমান।
এর আগে ইভ্যালির বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে ৯ সদস্যের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ কমিটির প্রথম বৈঠক আজ বুধবার অনুষ্ঠিত হয়।
মো. হাফিজুর রহমান বলেন, "ইভ্যালি দেনা কিভাবে পূরণ করবে, কাস্টমারের দেনা কিভাবে পরিশোধ করবে তা জানতে চেয়ে আমরা চিঠি দিয়েছিলাম। সে বিষয়ে গত ১ আগস্ট আমরা একটি চিঠি রিসিভ করেছি। তাদের ছয় মাস সময় লাগবে বলে আমাদের জানিয়েছেন। তারা বলেছে, এক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ পেয়েছে। তাদের দাবি, ছয় মাসের মধ্যে নিয়মিত পণ্য ডেলিভারি দেবে। তারা ১৫ দিন পর পর তথ্য জানাবে।"
তিনি বলেন, "আমরা চিঠি দিয়েছিলাম ১৯ জুলাই, তারা ৩১ তারিখ চিঠি দিয়ে জবাব দিয়েছে। সেখানে তাদের ১২ দিন সময় লেগেছে। এ মাসে আরও ১১ দিন সময় গেছে। সব বিবেচনা করে তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।"
প্রসঙ্গত, প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা আছেন।
গত ১৯ জুলাই ইভ্যালিকে কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নোটিশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছিল, "এ বছরের ১৪ মার্চ পর্যন্ত গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে মোট ৪০৭ কোটি টাকার বেশি দায় এর বিপরীতে মাত্র ৬৫ কোটি টাকা চলতি সম্পদ থাকার কারণ কী? অবশিষ্ট টাকা ইভ্যালির কাছে আছে কিনা- থাকলে সে বিষয়ে তথ্য এবং না থাকলে তার পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা দিতে হবে।"
উল্লেখ্য, গত ৪ জুলাই, গ্রাহক ও পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর (মার্চেন্ট) কাছ থেকে অগ্রিম নেওয়া ৩৩৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ কিংবা অবৈধভাবে সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা করে ইভ্যালি ডটকমের বিরুদ্ধে মামলা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া ইভ্যালির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাওয়া আর্থিক অনিয়মগুলো তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) পৃথক চিঠি পাঠায় মন্ত্রণালয়।