ই-কমার্স প্লাটফর্ম ইভ্যালির ন্যূনতম ব্রান্ডভ্যালু ৫ হাজার কোটি টাকা বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল।
বুধবার (১৮ আগস্ট) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে এমন দাবি করেন তিনি। ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
তার দাবি, “আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ও সাম্প্রতিক সময়ে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর একই ধরনের ব্যবসায়ের মূল্যায়নের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে ইভ্যালির ন্যূনতম ব্রান্ডভ্যালু ৫ হাজার কোটি টাকা হয়। তবে আমাদের কোম্পানির ব্রান্ডভ্যালু নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আমরা শুধুমাত্র ব্যয়ের সমপরিমাণ অংশটুকু বিবেচনা করেছি।”
এছাড়াও মোহাম্মদ রাসেলবাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে লিখেছেন, “ই-কমার্স ছাড়াও ইভ্যালিতে ইফুড, ইজবস, ইবাজার, ইহেলথ, ফ্লাইট এক্সপার্ট অন্তর্ভূক্ত করার তথ্য। এসব উদ্যোগ কোম্পানির সার্বিক ব্রান্ড ভ্যালুকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।”
ইভ্যালির ব্যালেন্স শিট অনুযায়ী, কোম্পানিটির মোট অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ১৫.৮২ কোটি টাকা। আর স্থায়ী সম্পদ হিসেবে কোম্পানিটির প্রপার্টি, প্ল্যান্ট ও যন্ত্রপাতি রয়েছে ১৪.৮৭ কোটি টাকার। এর বাইরে কোম্পানির চলতি সম্পদের পরিমাণ ৯০.৬৬ কোটি টাকা।
মোট দেনার তুলনায় ইভ্যালির স্থাবর-অস্থাবর সকল সম্পদ মূল্য বাদ দিলে ঘাটতি দাঁড়ায় ৪২২ কোটি টাকারও বেশি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া কোম্পানির ব্যালেন্সশিটে ঘাটতির সমপরিমাণ অর্থ বা ৪২২.৬২ কোটি টাকা কোম্পানির ব্রান্ডভ্যালু হিসেবে দেখিয়েছে ইভ্যালি।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, “ইভ্যালির প্রকৃত ব্রান্ডভ্যালু নেগেটিভ। কারণ, কোম্পানিটি যে বিজনেস মডেল ফলো করছে, তা টেকসই নয়। বরং মাত্র দু'বছরের মধ্যে ইভ্যালির যে বিপুল পরিমাণ দায় সৃষ্টি হয়েছে, তাতে কোম্পানিটির পক্ষে ভবিষ্যতেও কোন সম্পদ জেনারেট করা সম্ভব নয়। ইভ্যালি এখন ১০০ টাকা বাজারমূল্যের কোন পণ্য ৫০ টাকায়ও বিক্রি করতে চায়, ক্রেতারা আগ্রহী হবেন না। যে কোম্পানি কাস্টমারের পাওনা দিতে পারে না, তার ব্রান্ডভ্যালু পজেটিভ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বরং ইভ্যালি যে পরিমাণ ব্রান্ডভ্যালু হিসাব করেছে, তার প্রকৃত ব্রান্ডভ্যালু ওই পরিমাণ নেগেটিভ হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “একটি কোম্পানির সম্পদ ব্যবহার করে যখন ভবিষ্যতে আরও সম্পদ আহরণের সম্ভাবনা থাকে, তখনই ওই কোম্পানির ব্রান্ডভ্যালু তৈরি হয়। কিন্তু ইভ্যালির বিজনেস মডেল অচল। তার কোন ভবিষ্যতও নেই। এমন একটি কোম্পানির কোন ব্রান্ডভ্যালু থাকতে পারে না। এখন ইভ্যালি বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে পণ্য বিক্রি করতে চাইলেও ক্রেতারা আগ্রহী হবে না, তাই এর কোন ব্রান্ডভ্যালুও থাকার কথা নয়।”