কেবল কর আর দাম বাড়িয়ে তামাকজাত পণ্যের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি জনস্বাস্থ্যের ওপর বিশেষ প্রভাব ফেলে না বলে মনে করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। তার মতে, এজন্য উচ্চবিত্ত তো নয়ই, নিম্নবিত্তের মানুষও নেশা ছাড়বে না, বরং সন্তানের পড়ালেখার খরচের অর্থ নেশায় যাবে কিংবা তাদের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমে যাবে।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনে প্রাক বাজেট আলোচনায় তামাক নিয়ন্ত্রণে কর কিংবা দাম বাড়িয়ে দেওয়ার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এসব কথা বলেন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের অনলাইন সংস্করণ।
এনবিআর আয়োজিত ওই আলোচনা সভায় অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের (এটিএমএ) প্রতিনিধিরা তামাক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে তামাকজাত পণ্যে ব্যাপক হারে কর ও দাম বাড়ানোর দাবি জানান।
গত কয়েক বছর ধরেই তামাক ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে তামাকের দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো। এনবিআরও বছর বছর বাড়তি কর আরোপ করে তামাকের দাম বাড়িয়েই যাচ্ছে।
তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর উদ্দেশে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “আপনারা দাম বাড়াতে বললে তামাক কোম্পানিগুলো খুশি হয়, আমরা খুশি হই।”
কিন্তু “দাম বাড়িয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ করা যায়,” আপনাদের এমন ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। দাম বাড়িয়ে ফেনসিডিল, হেরোইনের দিকে ঠেলে দিতে চাই না।”
মাত্রাতিরিক্ত দাম বাড়িয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণের কারণে অন্যান্য ক্ষতিকর নেশায় আসক্তির পরিমাণ আরও বাড়ছে কি-না, সে সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, “যখন গাঁজা সুলভ ছিল, তখন হেরোইনসহ অন্যান্য মারাত্মক ক্ষতিকর নেশা এবং মানুষ হত্যার মতো অপরাধ কেমন ছিল, আর বর্তমানে সে পরিস্থিতি কেমন দাঁড়িয়েছে তা স্টাডি করা দরকার।”
তিনি বলেন, “আমি গাঁজার পক্ষে নই। কিন্তু গাঁজা দিয়ে হেরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল ঠেকানো গেলে আমি গাঁজার পক্ষে।”
আলোচনায় এটিএমএর পক্ষে প্রস্তাব তুলে ধরেন সদস্য মনির হোসেন লিটন এবং সহ-আহ্বায়ক নাদিরা কিরণ।
জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকার তামাকখাত থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় করছে, এর স্বাস্থ্যগত ক্ষতি তার চেয়েও বেশি।
আলোচনা সভায় এনবিআরের সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।