বাংলাদেশকে ৪৫০ কোটি ডলার (৪.৫ বিলিয়ন ডলার) ঋণ দেওয়ার বিষয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে জানাবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) আলোচক দল। বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আবুল কালাম আজাদ এসব তথ্য জানান।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আজ মিটিং করেছে আইএমএফের প্রতিনিধি দল। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত তিনটি বৈঠক হয়েছে। আগামী ৩০ এবং ৩১ অক্টোবর এবং ২ ও ৮ নভেম্বর তারা আবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করবেন। প্রথম পর্বের বৈঠকে বাংলাদেশকে ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার যে আশ্বাস রয়েছে, সেটি নিয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে।”
আইএমএফ কোনো শর্ত দেয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনায় ঋণ পাওয়ার বিষয়ে আইএমএফ কোনো শর্ত দেয়নি। তবে আর্থিক খাতের সংস্কার, নীতি ও ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”
ডলারের বিনিময় হার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ডলারের বিনিময় হার প্রসঙ্গে কথা হয়েছে। প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ডলারের বিভিন্ন রেট সম্পর্কে জানতে চান। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের রেট (কেন্দ্রীয় ব্যাংক) ৯৭ টাকা আর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর রেট বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
আইএমএফ ২১ অক্টোবর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, তাদের এবারের ঢাকায় আসা মূলত বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং আর্থিক খাতের সংস্কার ও নীতি নিয়ে আলোচনা করা। কর্মকর্তা পর্যায়ে চুক্তির অগ্রগতির জন্য আলোচনাই এই সফরের উদ্দেশ্য।
গত জুলাই মাসে বাংলাদেশ ঋণ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল আইএমএফের কাছে। চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত আইএমএফের বার্ষিক সভায় ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক ইঙ্গিত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সভার এক ফাঁকে এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বাধীন দল আইএমএফের সঙ্গে এক দফা আলোচনাও করে।
এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের রাজস্ব প্রশাসনের আধুনিকায়ন, রাজস্ব সংগ্রহ কার্যক্রমকে গতিশীল করা, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় কর আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি, আয়কর আইন ও শুল্ক আইন প্রণয়ন, ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও খেলাপি ঋণ কমানো, ভর্তুকি ও প্রণোদনা কমানো, রিজার্ভ গণনার পদ্ধতি ঠিক করাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হবে আইএমএফের সঙ্গে।