ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান ও ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকটের মধ্যে ২০২২ সালে শিল্পখাতের ঋণের পরিমাণ ১ লাখ কোটি টাকা বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ব্যাংকগুলো এ খাতে ৫৩১,০০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে, যেখানে ২০২১ সালে ছিল ৪২৯,০০০ কোটি টাকা।
এর পরিমাণ বেড়েছে ১০১,৩২১ কোটি টাকা।
২০২২ সালের তুলনায় টাকার বিপরীতে ডলারের দাম অন্তত ২৫% বেড়েছে, যার কারণে সামগ্রিক শিল্প ঋণ বেড়েছে বলে অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে।
২০২২ সালের আগস্ট থেকে আমদানি কমে যাওয়ায় বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়েছে।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারীতে বেসরকারী খাতে ঋণ বৃদ্ধি ছিল ১২.১৪%, যা ১১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।
বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে গেলেও শিল্প খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আটটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের গড় দাম বেড়েছে- কয়লা ২৮৫%, পেট্রোলিয়াম ৩০০%, লোহা ও ইস্পাত ২০%, সয়াবিন ৭৬%, গম ৬৩%, চিনি ১০০%, সার ৭৫%, তুলা ৬৮%।
২০২০ সালের জানুয়ারীর তুলনায় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে গড়ে দাম বেড়েছে ৭৭%।
২০২১ অর্থবছর ও ২০২২ অর্থবছরে মোট আমদানি ছিল যথাক্রমে ৫৪.৪০ বিলিয়ন ডলার ও ৭৮.৯৫ বিলিয়ন ডলার।
আমদানির প্রায় ৪৬% ছিল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য। ২০২১ অর্থবছরে এটি ছিল ২৩.০৫ বিলিয়ন ডলার। যেখানে একই পরিমাণ পণ্যের দাম ২০২২ অর্থবছরে ছিল ৪৪.২৫ বিলিয়ন ডলার। দাম বৃদ্ধির কারণে একই পণ্যের জন্য অতিরিক্ত ১৯.২৫ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত গুণতে হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২২ অর্থবছরে ৭.৬৭ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করতে হয়েছে।
এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলতি অর্থবছরে ১১ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করেছে।
ফলে অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক বেড়েছে ও গ্রাহকরা ২০০,০০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় করেছেন ও ১৯ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি পরিশোধ করেছেন।
শিল্প ঋণ প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিল্প খাতে মোট বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৭৩০,০০০ কোটি টাকা।
এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১২.৮৩%।
২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, খাতের ঋণের বকেয়া ছিল ৬২৮,০০০ কোটি টাকা বা ১৩.৬৪%।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২২ সালে শিল্প ঋণ বাড়লেও ২০২৩ সালে এটি কমবে।
২০২৩ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি এলসি খোলার পরিমাণ প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার কমেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই-ফেব্রুয়ারি মাসে ৪৫.৫২ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছে।
আগের অর্থবছরের একই সময়ে, ৫৯.৪৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের এলসি খোলা হয়েছিল, যা ২৩.৪৫% কমেছে।