অনলাইন জুয়া ও হুন্ডির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২১ হাজার ৭২৫টি মোবাইল হিসাব (মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস বা এমএফএস) বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
এসব হিসাবের বেশিরভাগই নগদ, বিকাশ ও রকেটের বলে জানা গেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের লেনদেনে জড়িত না হতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্কও করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মানি লন্ডারিংবিরোধী কমপ্লায়েন্স কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বিএফআইইউ এসব তথ্য তুলে ধরে।
বিএফআইইউর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বছরের ৯ মাসে ৩৭১টি অনলাইন গেমিং ও বেটিং লেনদেন, অনলাইন ফরেক্স ট্রেডিং সম্পর্কিত ৯১টি লেনদেন এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কিত ৪১৩টি লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে পাঠানো হচ্ছে।
বিএফআইইউ জানিয়েছে, অনলাইন জুয়া, হুন্ডির সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ৭২৫টি ব্যক্তিগত হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধ হুন্ডি, গেমিং, বেটিং ও ক্রিপ্টো সংক্রান্ত ৮১৪টি ওয়েবসাইট, ১৫৯টি অ্যাপ ও ৪৪২টি সোশ্যাল মিডিয়া পেজ ও লিংকের তালিকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে পাঠিয়েছে বিএফআইইউ। বিএফআইইউ ২১টি মানি চেঞ্জার এবং তাদের ৩৯টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে পাঠিয়েছে।
সভায় বিএফআইইউ-এর প্রধান মাসুদ বিশ্বাস বলেন, “দুষ্কৃতকারী ও অর্থ পাচারকারীরা যাতে ব্যাংকিং ব্যবস্থা ব্যবহার করে কোনো অপরাধ সংঘটিত করতে না পারে সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।”
বিএফআইইউ আর্থিক অপরাধের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যাদের পরিপালন ব্যবস্থায় দুর্বলতা দেখা যাবে, তাদের বিষয়েই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
সভায় নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ গ্রহণ করে বা নন-ফান্ডেড সুবিধাকে ফান্ডেড সুবিধায় রূপান্তর ও ফোর্সড লোন সৃষ্টি করে বিদেশে অর্থ পাচারসহ বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচার, অনলাইন ফরেক্স ট্রেডিং,গেমিং,বেটিং, ডিজিটাল হুন্ডি, ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মের মাধ্যমে ভার্চুয়াল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগসহ বিভিন্ন সমসাময়িক ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এছাড়া ওয়েজ আর্নারগণ যাতে ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠান সে বিষয়ে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে সচেতনতা বাড়ানোরও তাগিদ দেন।