দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে গরুর মাংসের দাম সবচেয়ে বেশি। দিনদিন অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে গরুর মাংসের দাম। দেশেই চাহিদার সিংহভাগ উৎপাদন স্বত্বেও গরুর মাংসের দাম বেশি হওয়ায় এর আগে একাধিকবার মাংস আমদানির দাবি উঠেছে। দেশীয় এ খাত বাঁচাতে এতদিন মাংস আমদানি বন্ধ ছিল।
এবার জাপান নিজ থেকে বাংলাদেশকে প্রস্তাব দিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান গরুর মাংস (কোবে বিফ) বাংলাদেশে প্রক্রিয়াজাত করতে কারখানা স্থাপন করতে চায় তারা। জাপান থেকে মাংস এনে বাংলাদেশে প্রক্রিয়াজাতকরণ করবে জাপানি প্রতিষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) কনফারেন্স হলে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বৈঠকে এ আগ্রহের বিষয় তুলে ধরেন জাপানের এক ব্যবসায়ী প্রতিনিধি।
বিজনেস গ্রুপ এস ফুডস ইনকর্পোরেশনের জেনারেল ম্যানেজার শিনিচি মিয়াওয়াকি বলেন, “বাংলাদেশে কোবে বিফ প্রসেস করার ফ্যাক্টরি করতে চাই আমরা। আমরা জাপান থেকে গরুর মাংস নিয়ে আসবো, এরপর এখানে প্রসেস করবো। আমরা হালাল উপায়ে এটি তৈরি করবো।”
সাংবাদিকদের সালমান এফ রহমান বলেছেন, “দেশের পাঁচ তারকা হোটেল, দেশে অবস্থানরত বিদেশি ও পর্যটকদের কাছে কোবে বিফের চাহিদা থাকবে।”
বাংলাদেশ উন্নয়ন সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ নেওয়াজ বলেন, “কোবে বিফ বিশ্বের এক নাম্বার ব্র্যান্ড। জাপানের অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান এস ফুডস কোবে বিফ নিয়ে আসছে। এটা খুবই সুস্বাদু মাংস। তারা দুবাইতে হালাল উপায়ে রপ্তানি করেন। এখন তারা হালালভাবে বাংলাদেশে প্রসেসড করতে চাচ্ছেন।”
প্রাণিসম্পদ খাতে ঈর্ষণীয় সাফল্য সত্ত্বেও গত ৭-৮ বছরে বাংলাদেশে গরু ও খাসির মাংসের দাম বেড়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে ঢাকার বাজারে এক কেজি গরুর মাংসের দাম ছিল ২৩০-২৫০ টাকা। এখন তা ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস প্রতি কেজি ৮৫০ থেকে ১,১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গরুর মাংসের দাম বাড়ার পেছনে ব্যবসায়ীরা বলছেন, গরু পালনে উৎপাদন খরচ বেশি। গরুর খাবারে দাম বেশি। এছাড়া ভারত বাংলাদেশে গবাদি পশু রপ্তানি বন্ধ করায় এই প্রভাব তৈরি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, অল্প কিছু সংখ্যক মানুষ বাদে দেশের অধিকাংশের ক্রয়ক্ষমতা দিনদিন কমে যাচ্ছে। দেশে নিত্যপণ্য কিনতেই হিমশিম খাচ্ছেন অল্পআয়ের মানুষেরা। মাছ-মাংস অনেক পরিবারের জন্য উৎসবকেন্দ্রীক খাবারে পরিণত হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ পাচ্ছে।