এ বছরের এপ্রিলে আমদানির জন্য ওপেনিং লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলার পরিমাণ ৭% কমেছে। যা আগের মাসের তুলনায় ২% বৃদ্ধি পেয়েছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, ঈদ-উল-ফিতরের ছুটির কারণে এলসি খোলার পরিমাণে এ চিত্র দেখা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো এপ্রিলে ৫.৬৮ বিলিয়ন ডলারের আমদানি এলসি খুলেছে, যা মার্চে ৬.১৩ বিলিয়ন ডলার থেকে কম, তবে ফেব্রুয়ারিতে ৪.৭৩ বিলিয়ন ডলার থেকে বেশি।
২০২৩ সালের একই মাসের তুলনায় এপ্রিলে এই পরিমাণ ২০% বেশি।
দুই ঈদেই রেডিমেড ও অন্যান্য উৎপাদন-সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো ১০-১৫ দিন বন্ধ ছিল। এসব প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন বন্ধ থাকায় কাঁচামালের চাহিদা কমে যায়।
ফলে ঈদের সময় আমদানি এলসি খোলার প্রবণতা কমে যায় বলে সূত্র জানায়।
যাইহোক, গত দেড় বছরে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানি কমাতে আমদানির এলসি মার্জিন ১০০% বজায় রাখা ও বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিতসহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেছে।
এ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ৫৬.১৯ বিলিয়ন ডলারের আমদানি এলসি খোলা হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৫৬.৩৬ বিলিয়ন ডলার থেকে কিছুটা কম।
এইভাবে, বছরের পর বছর এলসি খোলা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো এপ্রিল মাসে আমদানি এলসি বাবদ ৫.৫৪ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে, যা ফেব্রুয়ারি ও মার্চের পরিসংখ্যানের চেয়ে বেশি।
এপ্রিল মাসে এলসি নিষ্পত্তি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪% বৃদ্ধি পেয়েছে।
বর্তমানে ব্যাংকগুলো এলসি নিষ্পত্তির জন্য সর্বোচ্চ ১১৯ টাকায় ডলার বিক্রি করছে।
২০২২ সালের জুনের আগে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এর পর থেকে প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কমতে থাকে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি খরচ বেড়ে যায়। ফলে রিজার্ভ কমে যায়। এ সময় টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে।
গত ১৪ মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ছিল ১৮.৩২ বিলিয়ন ডলার। প্রকৃত বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা কম।
বাংলাদেশ ব্যাংক এখন সরকারি আমদানি দায় মেটানোর জন্য প্রতি ডলার ১১৭ টাকা ৪৪ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করছে। আবার যেসব ব্যাংক বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনছে, তাদের ডলার বাংলাদেশ ব্যাংক ১১৭ টাকা ৪৪ পয়সা দরে কিনে নিচ্ছে। এরপরও রিজার্ভের ক্ষয় ঠেকানো যাচ্ছে না। যে পরিমাণ ডলার বিক্রি করা হচ্ছে, কেনা হচ্ছে তার চেয়ে কম।
অর্থনীতিক সংকট ঠেকাতে আইএমএফের শর্ত মেনে গত সপ্তাহে ডলারের মধ্যবর্তী দাম ১১৭ টাকা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক; আগে যা ছিল ১১০ টাকা। এদিকে ঋণের সুদহারও বাজারভিত্তিক করা হয়েছে।