এনবিআরের (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত সম্পর্কে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সোমবার (৩০ জুন) সচিবালয়ে ৭২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের নতুন বাজেট ব্যবস্থা ঘোষণা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
অতীত সরকারের মতো দুদককে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় না; বরং আগে যারা গভর্নর ছিলেন, তারা অনেক সময় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। এখন সেই ধারা বদলেছে।”
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘‘কেউ চাইলে ভাবতে পারেন, এই সময়ে অনুসন্ধান শুরু হলো কেন। তবে এনবিআর ও বন্দর বন্ধ-সংক্রান্ত সমস্যার কারণে প্রতিদিন আমার কাছে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ নিয়ে এসেছেন যে হিসাব বন্ধ, বড় ক্ষতি হয়েছে ইত্যাদি। এটা কিন্তু একদম গ্রহণযোগ্য নয়।”
এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘‘এনবিআর হোক বা বন্দর, এসব তো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। এটা সরকারি প্রতিষ্ঠান, যেখান থেকে রাজস্ব আসে। আপনি যদি একতরফাভাবে একটি সেবা বন্ধ করে দেন, সেটা জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী।’’
এসময় আন্দোলনে যুক্ত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘ভালো করে কাজ করুন। পক্ষপাত বা ভয় ছাড়া কাজ করতে হবে। জনসেবা যেন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মাধ্যমে হয়, সেটা হলে কারও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কেউ বিচ্যুতি ঘটালে জবাবদিহি করতে হবে, এটাই স্বাভাবিক।”
এর আগে গতকাল দুদক জানিয়েছে, ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এনবিআরের ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। তারা হলেন- আয়কর নীতি বিভাগের সদস্য এ কে এম বদিউল আলম; নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার; অতিরিক্ত কমিশনার মির্জা আশিক রানা; অতিরিক্ত কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা; অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুণ্ডু ও যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান।
জানা যায়, এই ছয় কর্মকর্তার অন্তত ৫ জন এনবিআর সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গ সরাসরি যুক্ত ছিলেন।