অনেকদিন পর অভিষেক বচ্চনের দেখা মিললো লুডো ছবিতে
এই ছবির সাথে অনেকদিন পর কথাটা বেশ যায়। কারণ লুডোতে অনেকদিন পর অনেক কিছু ঘটেছে। অনেকদিন পর অনুরাগ বসু ছবি করেছেন। শেষ ছবিটা করেছিলেন বছর তিনেক আগে জাগ্গা জাসুস। অনেকদিন পর অভিষেক বচ্চনের দেখা মিললো লুডো ছবিতে। বছর দুয়েক আগে মনমরজিয়া ছবিতে দেখা গিয়েছিলো অভিষেককে। এ বছর দুটো ছবিতে তাকে দেখা গেছে দ্য বিগ বুল এবং লুডো।
অনুরাগ বসুর আগের দুই সিনেমায় রনবীর কাপুর অপরিহার্য ছিলেন। বারফি এবং জাগ্গা জাসুস এর পর এই রনবীরকে ছাড়াই ছবি বানালেন অনুরাগ। লুডোতে যাদের সাথে কাজ করেছেন তাদের কারো সাথেই আগে কাজ করেননি তিনি। অভিষেক বচ্চন, রাজকুমার রাও, আদিত্য রায় কাপুর, পঙ্কজ ত্রিপাঠি।
অনেকদিন পর মহামারি করোনার চাপ, কষ্ট, আতঙ্ক ভুলে একটু আরাম করে দেখার মত একটা সিনেমা পাওয়া গেলো অনুরাগ বসুর কল্যাণে। ওয়েব সিরিজ মানেই এখন থ্রিলার, যৌনতা এবং অ্যাকশনের মিশেল। সেখানে একটা মিক্সড প্যাকেজ বানিয়েছেন অনুরাগ বসু। লুডো বানানো হয়েছিলো সিনেমা হলে মুক্তি দেয়ার জন্যই। কিন্তু করোনার কারণে ওয়েবে মুক্তি দিতে হয়েছে। দিওয়ালি উপলক্ষ্যে গত ১২ নভেম্বর নেটফ্লিক্সে মুক্তি পায় লুডো।
মুক্তির পর দর্শকদের কাছে প্রশংসিত হয়েছে ছবিটি। চারটা গল্প সমানতালে বলে গিয়েছেন অনুরাগ বসু। আর গল্পকে সঙ্গ দিয়েছে চোখ জুড়ানো সিনেমাটোগ্রাফি। অভিনয়টা হয়েছে সাবলীল। গল্পগুলো আবার একটা আরেকটার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িতে। কিন্তু গল্পে গল্পে প্যাচ খায়নি। প্রতিটা গল্পই এগিয়েছে নিজের মত করে। ছবির নাম লুডো হয়তো এ কারণেই। চরিত্রগুলো লুডোর বোর্ডের মত একই জায়গায় ঘুরপাক খেয়েছে আগে পরে। ঘটনাচক্রে কেউ কারো পথে পড়েছে, কেউ কাউকে আক্রমণ করেছে কিন্তু ঘুরে ফিরে সবাই সেই একই নিরাপদ ঘরে পৌঁছাতে চেয়েছে, পেরেছেও বটে। ছবির শেষটাকে হ্যাপি এন্ডিং বলাই যায়। মূল চরিত্রগুলোর কারও কোন অপ্রাপ্তি রাখেননি পরিচালক। ছবি শেষে সবাইকে সুখে শান্তিতে বাস করতে দিয়েছেন।
গল্প, সিনেমাটোগ্রাফি, অভিনয়౼এই ছবির তিন শক্তি। বিশেষভাবে বলতে গেলে সাত্তু ভাইয়ের চরিত্রে পঙ্কজ ত্রিপাঠির অভিনয় দূর্দান্ত। মির্জাপুর সিরিজে অভিনয় করে কালীন ভাইয়ের যে চরিত্র তিনি মনের মধ্যে গেঁথে দিয়েছেন সেখান থেকে বের হয়ে অবলীলায় সাত্তু ভাই হয়ে গেছেন। যে গ্যাংস্টারের পিস্তল থাকে লুঙ্গির আড়ালে রাখা হোলস্টারে, মানুষ খুন করাটা যার কাছে মজা আর বুলেট যাকে ছুঁয়ে যায় কিন্তু ছিনিয়ে নিতে পারে না। বার বার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসে সাত্তু ভাই।
ছবিতে অনুরাগ বসু স্বয়ং অভিনয় করেছেন সূত্রধরের ভূমিকায়। ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন অনুরাগ বসু ও সম্রাট চক্রবর্তী। সঙ্গীতায়োজন করেছেন প্রিতম। ছবি তুলেছেন অনুরাগ বসু ও রাজেশ শুক্লা। আড়াই ঘণ্টার লম্বা ছবি। কিন্তু বিরক্ত হবেন না, সেটা জোর দিয়েই বলা যায়।
মতামত দিন