“টিপ পরা” নিয়ে উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছেন ঢাকার তেজগাঁও কলেজের প্রভাষক লতা সমাদ্দার। একজন শিক্ষিকার সঙ্গে এমন অপ্রীতিকর ঘটনায় অনেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাজু খাদেম, প্রাণ রায়, আনিসুর রহমান মিলন, স্বাধীন খসরু, মনোজ প্রামাণিক, চিত্রনায়ক সাইমন সাদিকের মতো পুরুষ অভিনয়শিল্পীরাও। তাদের অনেকেই নিজ নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে টিপ পরা ছবি দিয়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন।
তবে পুরুষ সহকর্মীদের এমন প্রতিবাদের বিপক্ষে আরেক অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান। বরং প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবে টিপ পরায় উল্টো তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: টিপ নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট দেওয়া সিলেটের সেই পুলিশকে বদলি
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সাজু খাদেম, আনিসুর রহমান মিলন, প্রাণ রায় ও মনোজ প্রামাণিকের টিপ পরা ছবিসহ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “আমরা কি দিন দিন পাগল হয়ে যাচ্ছি?”
এ অভিনেতা আরও লেখেন, “আল্লাহপাক সবাইকে এই সমস্ত পাগলের হাত থেকে হেফাজত করুক। মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করুন। আল্লাহ সবাইকে ক্ষমা করুক। আমিন।”
সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমার মনুষ্যত্ব তো কারও কাছে বিক্রি করবো না! মানুষ বেঁচে থাকে তার ব্যক্তিত্ব ও মনুষ্যত্বের জন্য। শিল্পীরা যে এমন কাজ করতে পারেন তা আমি ভাবতেও পারি না। এখন রমজান মাস। পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে। মুসলিম দেশে বসবাস করি। এমনিতেই বাংলাদেশের মানুষের ধারণা, মিডিয়ার লোকগুলো ইসলামবিরোধী, খারাপ। এর মধ্যে এটা করলো কিছু পাগল শিল্পী; আমি তাদের পাগলই বলবো! দেশে হাজার হাজার ঘটনা ঘটে, যেগুলো মাত্রারিক্ত। সেগুলো নিয়ে কিছু নাই অথচ একজন সার্জেন্ট (কনস্টেবল) কী বলেছে, সেটা নিয়ে এমন সময় এমন কিছু করলো! শিল্পী তো ধর্মের উপরে না। মানব জাতিও ধর্মের উপরে না। শিল্পীদের মন এত ছোট হওয়া যাবে না।”
প্রসঙ্গত, “টিপ পরা” নিয়ে শিক্ষিকাকে উত্ত্যক্তের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে কপালে টিপ পরে ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করে আক্রমণের শিকার হন জনপ্রিয় উপস্থাপক ও অভিনেতা সাজু খাদেম।
উল্লেখ্য, শনিবার (২ এপ্রিল) সকালে কর্মস্থলের দিকে হেঁটে যাওয়ার সময় পুলিশের পোশাক পরা একজন ব্যক্তি তাকে “টিপ পরছোস কেন” বলে কটূক্তি করেন। তিনি তখন প্রতিবাদ জানালে গায়ের ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন ওই পুলিশ সদস্য।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে লতা সমাদ্দার বলেন, “আমি ঠিক পেছনে তাকিয়ে দেখি, একজন পুলিশ একটা বাইকের ওপর বসে আছে। আমি তার প্রতিবাদ করলে সে নোংরা ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে সে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে আমার শরীরের ওপর চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি সটকে যাই, কিন্তু তার বাইরের চাপা আমার পায়ে লাগে। আমার পা ইনজ্যুরড (আহত)।”