২০২১ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়া হবে আগামী ৯ মার্চ। ২০২১ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের এবারের আসরটি উপস্থাপনা করবেন নুসরাত ফারিয়া। বিষয়টি নিয়ে জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী বেশ উচ্ছ্বসিত।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান উপস্থাপনা প্রসঙ্গে নুসরাত ফারিয়া সংবাদমাধ্যম সমকালকে বলেন, “এর আগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আমি নেচেছি। প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করতে যাচ্ছি- বিষয়টি ভেবে ভালো লাগছে।”
জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী আরও বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকবেন আয়োজনে, তাই ভয়ও কাজ করছে। তবে এটাও সত্যি, আমার কাছে উপস্থাপনাকে ভীষণ চালেঞ্জিং মনে হয়।”
আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নুসরাত ফারিয়া বলেন, “যারা আমাকে এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থাপনার জন্য নির্বাচিত করেছেন, তাদের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। এখন শুধু সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষা- ঠিকঠাকভাবে যেন সবার ভালো লাগার মতো উপস্থাপনা করতে পারি।”
দেশের চলচ্চিত্র শিল্পী ও কলাকুশলীদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মাননা ও কাজের স্বীকৃতি হলো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতি বছর সিনেমা সংশ্লিষ্টদের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়া হয়।
প্রতিবছর ২৮টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হয়। তবে শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক ক্যাটাগরিতে কোনো প্রার্থী যোগ্য বিবেচিত না হওয়ার কারণে এ বছর ২৭ ক্যাটাগরিতে ৩৪টি পুরস্কার দেওয়া হবে।
চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদান রাখায় আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন অভিনেত্রী ডলি জহুর ও চলচ্চিত্র অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন।
আজীবন সম্মাননার পাশাপাশি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কারও এবার ভাগাভাগি হবে। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে যে এবার যৌথভাবে পুরস্কার পাচ্ছেন মাতিয়া বানু শুকু (লাল মোরগের ঝুঁটি) ও রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য)।
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা যৌথভাবে মো. সিয়াম আহমেদ (মৃধা বনাম মৃধা) ও মীর সাব্বির মাহমুদ (রাতজাগা ফুল), শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী যৌথভাবে আজমেরী হক বাঁধন (রেহানা মরিয়ম নূর) ও তাসনোভা তামান্না (নোনাজলের কাব্য), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পার্শ্ব চরিত্রে এম ফজলুর রহমান বাবু (নোনাজলের কাব্য), শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্ব চরিত্রে শম্পা রেজা (পদ্মপুরাণ), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা খল চরিত্রে মো. আবদুল মান্নান জয়রাজ (লাল মোরগের ঝুঁটি)।
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম (যৈবতী কন্যার মন), শ্রেষ্ঠ গায়ক কে. এম. আবদুল্লাহ-আল-মুর্তজা মুহিন (শোনাতে এসেছি আজ-পদ্মপুরাণ), শ্রেষ্ঠ গায়িকা চন্দনা মজুমদার (দেখলে ছবি পাগল হবি-পদ্মপুরাণ), শ্রেষ্ঠ গীতিকার প্রয়াত গাজী মাজহারুল আনোয়ার (অন্তরে অন্তর জ্বালা-যৈবতী কন্যার মন), শ্রেষ্ঠ সুরকার সুজেয় শ্যাম (অন্তরে অন্তর জ্বালা-যৈবতী কন্যার মন)।
শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য), শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার নূরুল আলম আতিক (লাল মোরগের ঝুঁটি), শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা তৌকীর আহমেদ (স্ফুলিঙ্গ)।
শ্রেষ্ঠ সম্পাদক সামির আহমেদ (লাল মোরগের ঝুঁটি), শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক শিহাব নূরুন নবী (নোনাজলের কাব্য), শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক দলগত-সৈয়দ কাশেফ শাহবাজি, সুমন কুমার সরকার, মাজহারুল ইসলাম রাজু (লাল মোরগের ঝুঁটি), শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক শৈব তালুকদার (রেহানা মরিয়ম নূর), শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা ইদিলা কাছরিন ফরিদ (নোনাজলের কাব্য)। শ্রেষ্ঠ মেক-আপম্যান দলগত- মো. ফারুখ, মো. ফরহাদ রেজা মিলন (লাল মোরগের ঝুঁটি)।
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আকা রেজা গালিব (ধর), শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র কাওসার চৌধুরী (বধ্যভূমিতে একদিন)।
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা কৌতুক চরিত্রে প্রভাষ কুমার ভট্টাচার্য্য মিলন (মৃধা বনাম মৃধা), শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী আফিয়া তাবাসসুম (রেহানা মরিয়ম নূর), শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার জান্নাতুল মাওয়া ঝিলিক (যা হারিয়ে যায়)।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়ার জন্য গত ১৬ আগস্ট ১৩ সদস্যের জুরি বোর্ড গঠন করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। জানা যায়, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য ২০২১ সালের মুক্তিপ্রাপ্ত ২১টি পূর্ণদের্ঘ্য, ১৭টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও ৭টি প্রামাণ্য চলচ্চিত্রসহ মোট ৪৫টি চলচ্চিত্র জমা পড়েছিল।