ঢাকাই সিনেমার তারকা অভিনেতা শাকিব খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন “অপারেশন অগ্নিপথ” সিনেমার প্রযোজক রহমত উল্লাহ। শাকিব খানের বিরুদ্ধে হোটেলের একটি কক্ষে সহ-প্রযোজককে ধর্ষণচেষ্টা ও তাকে শারীরিকভাবে গুরুতর আহত করা, অপেশাদারি ও অনৈতিক আচরণ এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েও শুটিংয়ে অবহেলা করার অভিযোগ আনেন তিনি।
বুধবার (১৫ মার্চ) বিকেলে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাঙালি এই প্রযোজক সশরীরে এফডিসিতে উপস্থিত হয়ে এ অভিযোগ করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য জানতে শাকিব খানের সঙ্গে কয়েক দফায় যোগাযোগ করা হলেও সাড়া মেলেনি।
শনিবার রাতে সেই পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন শাকিব খান। এ সময় সাংবাদিকরা ধর্ষণের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সেই সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে (মামলা) করতেই আজকে এখানে এসেছিলাম।...কোনো কিছু সংঘটিত হলে আমরা কোথায় যাব? নিজের এলাকার থানায় যাব। থানা পরামর্শ দিয়েছে, মামলাগুলো কোর্টে করলে ভালো হয়। আমি কোর্টে গিয়ে এটা ফেস করব।”
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে প্রযোজক রহমত উল্ল্যাহ ও শাকিব খানের মধ্যে মীমাংসার চেষ্টা করেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। প্রায় ঘণ্টা খানেকের ওই বৈঠকে কোনো সুরাহা হয়নি। এর এক দিন পরই আইনি ব্যবস্থা নিতে থানায় গেলেন শাকিব। তবে পুলিশ তার মামলা গ্রহণ করেনি
রহমত উল্ল্যাহ তার অভিযোগে দাবি করেছেন, “তিনি (শাকিব খান) আমাদের একজন নারী সহ-প্রযোজককে কৌশলে ধর্ষণ করেন। ভুক্তভোগী এই নারীকে তিনি অত্যন্ত পৈশাচিকভাবে নির্যাতন করেন। গুরুতর জখমসহ রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। নির্যাতিতা তখন এ ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। নির্যাতিতা নিজেও একজন বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত নারী। আমি সেই ফৌজদারি অভিযোগের সাক্ষী ছিলাম। এই ঘটনার পর তিনি এবং তার পরিবার সামাজিকভাবে যেই গ্লানি এবং কুৎসার স্বীকার হন, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে একটা পর্যায়ে তার নিজের এবং তার পরিবারের টিকে থাকাটাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। ওই দিন আমরা যখন সহকর্মীকে নিয়ে হাসপাতালে ব্যস্ত, শাকিব খান সেদিন কাউকে কিছু না জানিয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে চুপিসারে চলে যান।”

বিষয়টি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শাকিব বলেন, “অস্ট্রেলিয়ায় যদি আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়, অস্ট্রেলিয়ায় আমার বিচার না হয়ে সেখান থেকে আমি তো আসতে পারি না। অস্ট্রেলিয়ায় আইন-প্রসাশনের উপর তাইলে তো কোনো আস্থাই নাই। সে বলেছে (রহমত উল্ল্যাহ) এটা একটা কেস নম্বর, আসলে এটা কেস নম্বর না। তার পরতে পরতে মিথ্যা। ইটস অ্যা ট্র্যাপ।”
এ সময় শাকিবের লিগ্যাল অ্যাডভাইজার অ্যাডভোকেট খাইরুল বলেন, “আপনারা অস্ট্রেলিয়ার যে মামলাটার কথা বলছেন, সেটা কিন্তু তদন্ত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। উনি যদি ওখানে দোষী প্রমাণিত হতেন, আজকে কিন্তু বাংলাদেশে আসতে পারতেন না। কেস শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং আপনারা অবশ্যই নিউজ পেতেন উনি যদি ওখানে গ্রেপ্তার হতেন।”
তিনি আরও বলেন, “উনি (শাকিব খান) যদি নারী ঘটিত কোনো কেলেঙ্কারি করতেন, গ্রেপ্তার ছাড়া এই দেশে আসতে পারতেন না এবং এটা সম্পূর্ণ ভুয়া ও সাজানো। অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ এটা তদন্ত করেছে, তাদের লাস্ট উক্তি ছিল, মিষ্টার খান- দিস ইজ অ্যা হ্যানি ট্র্যাপ, সো বি অ্যাওয়ার ইউরসেলফ ফ্রম দেম।”