মোঘল সম্রাট বাবর ভারতবর্ষ আক্রমণ করেছিলেন অনেকটা খেয়ালের বসে। তার ভারতবর্ষের প্রতি তেমন কোনও আগ্রহ ছিল না। ভোজনরসিক সম্রাট বাবরের ভারতের স্থানীয় খাবারের প্রতি খুবই বিতৃষ্ণা ছিল। বাবর তার জীবনীগ্রন্থ “বাবরনামা”তে লিখেছেন, "একটাও ভালো খাবার নেই। মাংস, আম, আঙ্গুর, তরমুজ, খরমুজ কিচ্ছু না। কোনও বরফ নেই, ঠাণ্ডাজল নেই, বাজারে রুটি নেই।" বাবরের এমন ধারণা হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। কারণ তার দেশ উজবেকিস্তান ছিল আভিজাত্য ও শৌর্যবীর্যে ভরপুর।
খিচুরি, বিরিয়ানি ও পোলাও
বাবরের পর মুঘল সাম্রাজ্যের ভার বাবরপুত্র হুমায়ুনের ওপর ন্যস্ত হয়। তিনি জীবনের বেশিরভাগ সময় পারস্যে কাটিয়েছেন। ভারতবর্ষের রান্নাঘরে “খিচুরি”, “বিরিয়ানি” ও “পোলাও” পদগুলি সম্রাট হুমায়ুনের হাত ধরে এসেছে।
ঝলসানো মাংস
সমরখন্দে সম্রাট বাবর হেরে যাওয়ার পর পাহাড়-বনে-জঙ্গলে থাকতেন। ফলে তার খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এসেছিল। তখন তিনি ঝলসানো মাংস খেতেন। বিভিন্ন মুখরোচক মসলা সহযোগে ঝলসানো মাংস আজও ভারতীয় রান্নাকে সমৃদ্ধ করে রেখেছে।
আঙ্গুর ও তরমুজ চাষ
বিখ্যাত ঐতিহাসিক লিজি কলিংহাম তার “আ টেইল অব কুকস অ্যান্ড কনকুয়ারস” বইতে লিখেছেন, "শেষ জীবনে বাবর ভাবলেন ভারতেও তো চাইলেই আঙ্গুর ও তরমুজ চাষ করা যায় কিন্তু এর স্বাদ অনুভব করলেই স্বদেশের কথা মনে পড়ে যায়।"
জাফরান ও হিং ব্যবহার
বাদশাহ আকবরের আমলে খাবারে জাফরান ও হিং ব্যবহারের প্রচলন ঘটে। খাবারে এসব উপাদান যাতে সহজেই দেওয়া যায় তাই এসব চাষের প্রচলনও তাদের হাত ধরেই ভারতবর্ষে আসে।
আম
আম সম্রাট আকবরের পুত্র জাহাঙ্গীরের খুব প্রিয় ছিল। এমনকি তিনি মাংসের সাথেও আম খেতে খুব পছন্দ করতেন।
বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবার
নানা মিষ্টান্ন সম্রাট জাহাঙ্গীরের পছন্দের তালিকায় ছিল। যারফলে পরর্বীতে ভারতবর্ষের মানুষও সেগুলোর স্বাদ আস্বাদনের সুযোগ পায়।