কোন ঘরে কেমন পর্দা মানাবে? ডাইনিং টেবিলে কি শুধুই ম্যাট? লিভিংরুমের মেঝেতে কার্পেট নাকি উন্মুক্ত মার্বেলের মেঝে? আর সোফাতে গুটিশুটি মারা আদুরে কুশনের সাজ? ভাবনার এই সম্পূর্ণ এক্সারসাইজটাই দারুণ উপভোগ্য ও এক্সাইটিং!
তবে, রুচি যেমনই হোক, কিছু কথা ঘর সাজানোর সময় অবশ্যই মনে রাখতে হবে। জেনে সেগুলো সম্পর্কে।
১. ঘর-বাড়ির সাজ-পোশাকের ক্ষেত্রে প্রথমেই মনে রাখতে হবে আপনার ফ্ল্যাটের আয়তন, আপনার প্রয়োজন, পছন্দ ও মেনটেনেন্স।
২. ছোট ফ্ল্যাট হলে ঝালর দেওয়া, স্যাটিনের ইলাবোরেট পর্দা, ফার দেওয়া সোফা একেবারেই বেমানান। আর আপনি যদি তেমন ভাগ্যবান হন, আপনার যদি বেশ একটা জুতসই হলঘর থাকে, সেখানে এমন পর্দা লাগাতে পারেন।
৩. আজকালকার মাঝারি মাপের ফ্ল্যাটের কথা মাথায় রেখে বলা যায়, ভাল কটন কিংবা খাদির পর্দা, সোফা কভার খুব ভাল। জুট-কটনও ব্যবহার করতে পারেন। আমাদের গ্রীষ্মপ্রধান দেশে সুতি চোখেরও আরাম বটে। তাছাড়া কাঠের পেলমেট, লোহার রডের কাঠিন্য কিছুটা প্রশমিত হয় সুতির কাপড়ের পেলবতায়। যতই অর্থের সাশ্রয় হোক না কেন, সিনথেটিক পরদা লাগাবেন না প্লিজ।
৪. গরমকালে মোটা ভারী পর্দা বহার করুন। গরমে ঘর অন্ধকার করতে চাইলে পরদায় ইন্টারলাইনিং ব্যবহার করুন।
৫. কম্বিনেশন করে পর্দা লাগালেও সুন্দর দেখায়। খাদির পর্দার সঙ্গে হালকা চান্দেরি পর্দা খুব ভাল মানায়।
৬. পর্দার জন্য এমন কাপড় বাছুন, যা মেনটেন করা সহজ। দোকানে গিয়ে মনস্থির করতে না পারলে সলিড কালারের পরদার কাপড় কিনুন, জংলা প্রিন্ট কিনে ফেলবেন না যেন।
৭. পাতলা, স্বচ্ছ পর্দা বা শিয়ার কার্টেন ঘরে একটা ডেপথ তৈরি করে।
৮. সাদা মসলিনের পরদায় সারা ঘরে আলো বিচ্ছুরিত হতে সুবিধে হয়।
৯. পুরনো শাড়ি কেটে বানিয়ে নিতে পারেন মনের মতো পর্দা। ফর্ম্যাল লুক চাইলে সিল্ক, ভেলভেট, স্যাটিন সিল্ক আদর্শ।
১০. জানলার পর্দার জন্য জানলার যা চওড়া, তার চেয়ে কাপড় যেন আড়াইগুণ বেশি হয়। তাহলে সুন্দর প্লিটস হবে।
১১. পর্দার বদলে কটন বা স্যাটিন কটন ব্লাইন্ডও লাগাতে পারেন। এগুলো বাড়িতে ধোয়া যায়। পর্দা ও ব্লাইন্ড একসঙ্গেও লাগাতে পারেন।
১২. সোফা কভারের জন্য অফহোয়াইট কাপড় বেছে নিলে রঙিন কুশন অ্যাড করতে ভুলবেন না। নিউট্রাল শেডের সঙ্গে রঙের সংযোজন ঘরকে উজ্জ্বল দেখায়। সাধারণ বেতের চেয়ারও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে যথাযথ কুশনের সম্মিলনে।
১৩. যে ধরনের কাপড়ই বাছুন না কেন, কালার স্কিমটা ভেবে নেবেন। রঙেরঙে যুদ্ধ না লেগে যায়। একটি ঘরের কালারস্কিম নির্ভর করবে সেই ঘরে ন্যাচারাল লাইট কতটা আসে, ঘরের মাপ, কোন ধরনের আবহ আপনি তৈরি করতে চান তার উপর।
১৪. পুরনো দিনের কাঠের আসবাবের জবাব নেই, গদি বদলে নিয়ে খেশের কাপড় দিয়ে কভার করে নিন, একেবারে অভিনব!
১৫. খাবার টেবিলে টেবিল কভার কটন প্রিন্টেড বা একরঙা টেবিল ক্লথ ব্যবহার করতে পারেন। ডার্ক পলিশের টেবিল হলে কাজ করা রানার রাখলেও ভাল দেখাবে। শখের টেবিল কভার ঝোল-ঝালের দাগ থেকে বাঁচাতে প্লাস্টিক কভার দেবেন না যেন বরং টেবিল ম্যাট পাতুন।
১৬. বেডরুমে পর্দার সঙ্গে মিলিয়ে বেডকভার কিনুন। বেডশিট সাধারণত হালকা রঙেরই হয়। তবে ধবধবে সাদা বেডশিটের জবাব নেই বেডকভার নানারকম পাওয়া যায়।
এই টুকরো কথাগুলোই কিন্তু ঘরের সৌন্দর্য নির্ধারণ করে। আকার-আয়তন নিয়ে তো দিন-রাত এক্সপেরিমেন্ট করা সম্ভব নয়। তাই মাঝেসাঝে এই আনুষাঙ্গিক অঙ্গগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করুন। দেখবেন, ঘর হয়ে উঠবে স্বপ্নের কোনও দৃশ্য!