স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট অর্থাৎ স্ট্রেসের সঙ্গে মোকাবেলা করা। নিজের মনের ওপরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে হবে নিজের হাতে! আর এটি করার প্রধান উপায় হচ্ছে নেতিবাচক চিন্তাগুলোকে ইতিবাচক করা। যদি মনে হয় যে আপনি চলে যাচ্ছেন স্ট্রেসের কবলে তাহলে একেএকে মেনে চলার চেষ্টা করুন কয়েকটি ধাপ।
১. প্রথম ধাপ, একটি ডায়েরিতে লিখতে শুরু করুন রোজকার ভাবনা-চিন্তাগুলো।
একে বলা হয় থট ডায়েরি। এতে লিখে ফেলুন কোন পরিস্থিতিতে আপনার মনে কী কী নেতিবাচক চিন্তা তৈরি হচ্ছে। একটা কথা আছে, “অটোম্যাটিক থট”। অর্থাৎ, যে মুহূর্তে আপনি কোনও একটা পরিস্থিতিতে পড়ছেন, তখনই নিজে থেকে চলে আসছে কিছু নেগেটিভ চিন্তা। তাকে আটকানোর কোনও ক্ষমতাই থাকছে না আপনার। তখনই লিখে ফেলতে হবে আপনার মনের ভেতরে আসা ওই অটোম্যাটিক থটগুলোকে।
২. দ্বিতীয় ধাপ, নেতিবাচক ভাবনাগুলোর মধ্যে কোনটা সবচেয়ে বেশি নেগেটিভ সেটাকে তুলে ধরা।
একে বলা হয় “হট থট”। হয়তো একই সময় অনেকরকম নেগেটিভ চিন্তা ভিড় করে আসছে আপনার মনে। তারমধ্যে থেকে যেটা সবচেয়ে বেশি আপনাকে চিন্তায় ফেলছে, বেছে নিতে হবে সেটাকে।
৩. শেষ ধাপ, অন্যভাবে চিন্তা করার চেষ্টা।
ভাবতে হবে, “এই যে আমি এভাবে ভাবলাম, এটা কি অন্যরকমভাবে ভাবলে পারতাম?” একটা সহজ উদাহরণ দেওয়া যাক। ধরুন, আপনার বস আপনাকে ডেকে পাঠিয়েছে বিকেলবেলা। এরপর সারাদিনটা সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করেই কেটে গেল আপনার! এটাকে তো অনেকরকমভাবে ভাবতে পারেন। কেউ ভাবতে পারে, বস তার কাজে সন্তুষ্ট হয়ে তাকে ডেকেছে, হয়তো প্রোমোশন দেবে! আবার কেউ ভাবতে পারে, সে হয়তো মারাত্মক কিছু একটা ভুল করেছে, তার চাকরিটাই চলে যাবে!
এই দু’টোই এক্সট্রিম থট। একটা অত্যন্ত ইতিবাচক, একটা অত্যন্ত নেতিবাচক। তবে কোনও একটা মাঝখানের ভাবনাও তো থাকতে পারে! তাই সেই নেতিবাচক ভাবনাগুলোকে লিখে ফেলে, এবার ভাবতে হবে যে এটা থেকে কোনও “অল্টারনেটিভ থট প্রসেস” বা বিকল্প চিন্তা তৈরি করা যায়। অর্থাৎ, বিষয়টা অন্য কোনভাবে ভাবা যায় কিনা সেটি ভেবে বের করা। আর একেই বলে “কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি”।
মনে রাখতে হবে
যদিও সমস্যার সমাধান সবক্ষেত্রে এত সহজ হয় না। কখনও-কখনও স্ট্রেসের মাত্রা বেড়ে গিয়ে অ্যাংজাইটি ও ডিপ্রেশন এতটাই বেড়ে যায় যে তখন যুক্তি দিয়ে ভাবনা-চিন্তা করার ক্ষমতাটাই আর থাকে না। নেতিবাচক চিন্তাগুলোকে সনাক্ত করে, সেগুলোকে অন্যরকম ভাবনায় বদলে ফেলা সেই মানুষটির পক্ষে তখন প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। অ্যাংজাইটি হারিয়ে দেয় সঠিকভাবে ভাবনা-চিন্তা করার ক্ষমতাকে।
এমনটি হলে আর দেরি না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শমত ওষুধ খাওয়া উচিৎ। কেননা এক্ষেত্রে ওষুধ কাজ করে কিছুটা অনুঘটকের মতো, নেতিবাচক ভাবনার ইন্টেনসিটি কমিয়ে দেয়।