এক সময় গ্রাম এবং শহরের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই মাটির থালা, গ্লাস, কলস, পানির জগ ও মগ, মাটির হাঁড়ি ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে খাবার রাখার জন্য প্রায় সকল বাড়িতেই ব্যাবহার হচ্ছে ননস্টিক পাত্র।
অনেক বাড়িতে ননস্টিক না হলেও অ্যালমুনিয়াম অথবা সিলভারের পাত্রে রান্না করা হয়। কিন্তু অ্যালমুনিয়াম ননস্টিক অথবা সিলভারের পাত্রে রান্না করার থেকে যদি মাটির পাত্রে রান্না করা হয় তাহলে পাওয়া যায় অনেক উপকার।
ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউট্রিশন এক গবেষণায় দাবি করেছে যে, রান্নার ক্ষেত্রে সব থেকে উপযোগী হল মাটির পাত্র।
ননস্টিক পাত্রে যখন রান্না করা হয়, তখন এটি থেকে এক ধরনের ধোয়া নির্গত হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। তবে খাবার খাওয়ার জন্য স্টেনলেস স্টিলের পাত্র সবথেকে বেশি নিরাপদ।
চলুন জেনে নেওয়া যাক খাবার রান্না, সংরক্ষণ ও পরিবেশনে কেন মাটির পাত্র ব্যবহার করবেন-
- মাটির হাঁড়িতে অথবা কড়াইতে রান্না করলে খাবারের সমস্ত পুষ্টিগুণ বজায় থাকে। এছাড়াও খাবারের মধ্যে মসলা খুব সুন্দরভাবে মিশে যায়। সর্বোপরি মাটির পাত্রে রান্না করলে তেল খুব কম লাগে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী।
- কিছু গবেষণার বলে যে, প্লাস্টিকের পাত্রে সংরক্ষণ করা পানি শরীরের টেস্টোটেরোনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। কিন্তু মাটির পাত্রে রাখা পানি টেস্টোটেরোন বজায় রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও মাটি প্রাকৃতিকভাবে পানি ঠাণ্ডা রাখে। ফলে তা শরীরের বিপাক বাড়াতে সাহায্য করে।
- মাটির পাত্রে থাকে অসংখ্য আণুবীক্ষণিক ছিদ্র। এই ছিদ্রগুলো দিয়ে পানি চুইয়ে বাইরের পৃষ্ঠে আসে ও বাষ্পীভূত হয়। পানি বাষ্পীভূত হওয়ার সময় কিছুটা তাপ শোষণ করে। ফলে পাত্র ঠাণ্ডা থাকে। এছাড়াও পোড়ামাটির পাত্রের ক্ষুদ্র ছিদ্র আর্দ্রতা অপসারণ ও দীর্ঘ সময় খাবার সংরক্ষণ করতে সাহায্য করে।
- মাটির পাত্রে পানি রাখলে পানিতে হরেক রকমের খনিজ পদার্থ মেশে। ফলে দেহে প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদানগুলোর অভাব হয় না। ভালো থাকে বিপাকপ্রক্রিয়াও।
- মাটির পাত্র যেহেতু কাদা মাটি দিয়ে তৈরি, তাই সেটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং রাসায়নিক মুক্ত।