সুস্থ থাকার জন্য কিছু অভ্যাস মেনে চলা খুবই জরুরি। স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করলে অনেক সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়। সকালের নাস্তার পাশাপাশি দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবার আমাদের খাদ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ এটি আমাদের শরীরে পুষ্টি এবং শক্তি সরবরাহ করে। তবে কিছু অভ্যাসের কারণে স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েও অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। আসলে, দুপুরের খাবার বা রাতের খাবার খাওয়ার পর কিছু কাজ করা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে এগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো।
আবার অনেকেই রাতের খাবার কখন খাবেন, তার সঠিক সময় জানেন না। দেশ ভেদে রাতের খাবার খাওয়ার সময়ের পার্থক্য হয়। ইউরোপ-আমেরিকায় সাধারণত সন্ধ্যার পরপরই রাতের খাবার খেয়ে ফেলে। তবে বাংলাদেশে এর দুই ধরনের চ্রিত দেখা যায়। গ্রামের মানুষরা সাধারণত সন্ধ্যা হতেই খেয়ে ফেলেন। আবার শহরে এর চিত্র ঠিক উল্টো। তারা একটু বেশি রাতেই খাওয়াদাওয়া করে। তবে বেশি রাতে খাবার খাওয়া মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়।
চিকিৎসকদের মতে, রাতের খাবার খাওয়ার সঠিক সময় আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর বেশ প্রভাব ফেলে।
রাতের খাবার খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন
রাতের খাবার খাওয়ার স্বাস্থ্যকর সময় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের ব্রিগহ্যাম অ্যান্ড উইমেন্স হাসপাতালের একটি গবেষণা আছে। এটি ২০২২ সালে বিজ্ঞান সাময়িকী ‘‘সেল মেটাবলিজম’’-এ প্রকাশিত হয়। ওই গবেষণা অনুযায়ী, তাড়াতাড়ি রাতের খাবার খাওয়ার উপকারিতা যতটা বলে জানতাম আমরা, এর উপকারিতা তারচেয়ে আরও বেশি।
কেন তাড়াতাড়ি খাবেন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং গবেষকদের আন্তর্জাতিক গ্রুপগুলোর তথ্যমতে, বিশ্বে প্রায় ১০০ কোটির বেশি মানুষ স্থূলতায় ভুগছে। যাদের মধ্যে রয়েছে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষও। স্থূলতা নিয়ন্ত্রণ করতে পরিমিত আহার আর শরীরচর্চার পাশাপাশি প্রয়োজন সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ। সাধারণত রাতের বেলা আমরা কোনো কাজ করি না। এসময় আমাদের পাকক্রিয়া মন্থর হয়ে যায়। তাই ভরপেট খেয়ে শুয়ে পড়লে হজমের বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। এছাড়াও দেরি করে খেলে খাবারে থাকা শর্করা পুরোপুরি হজম হতে পারে না। ফলে দেখা যায়, সকালে খালি পেটে রক্তে শর্করার পরিমাণ অনেকটা বেড়ে গেছে। অন্য দিকে, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার একটি নির্দিষ্ট সময় আগে খাবার সেরে ফেললে খুব সহজেই হজম হয়ে যায়।
ব্রিগহ্যাম অ্যান্ড উইমেন্স হাসপাতালের একটি গবেষণায় দেখা যায়, যারা তাড়াতাড়ি রাতের খাবার খায়, তাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কম, ক্যালরি পোড়ানোর ক্ষমতা বেশি ও তাদের প্রত্যেকেরই রাতে ভালো ঘুম হয়। অন্য দিকে যারা দেরি করে রাতের খাবার খায়, তাদের ক্ষুধা বেড়ে যায় এবং দেহে চর্বি সঞ্চয় বৃদ্ধি পায়, যা ডায়াবেটিস ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
এছাড়াও তাড়াতাড়ি রাতের খাবার খেলে ওজন কমার পাশাপাশি হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে এবং দেহে গ্লুকোজ ও খারাপ কোলেস্টেরল লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিনের (এলডিএল) মাত্রাও হ্রাস পেতে থাকে।
রাতের খাবার খাওয়ার সময় ঠিক কখন
একেকজনের খাবার খাওয়ার সময় একেক রকম হয়ে থাকে। তাই রাতের খাবার খাওয়ার কোনো আদর্শ সময় বলা খুবই কঠিন। তবে চিকিৎসক ও গবেষকেরা ঘুমানোর অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।
তথ্যসূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট