দাদিকে কুপিয়ে খুন এবং একই অস্ত্র দিয়ে বাবা-মাকেও আক্রমণ করে ফেসবুকে লাইভ করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এক যুবক। সোমবার (১০ জুন) সকালে রাজ্যের হুগলিতে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ইন্দ্রনীল রায় নামে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে স্থানীয় পুলিশ।
ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করেও তার কাছ থেকে সন্তোষজনক কোনো জবাব পাননি তদন্তকারীরা। অসলগ্নভাবে কখনও সে বলেছে, ‘‘আমি তো মারিনি।’’ কখনওবা নির্লিপ্তভাবে বিড়বিড় করে বলছে, ‘‘কতগুলো লোক ঘুরছিল বাড়ির বাইরে। ওরাই মেরেছে।’’
মানসিক অবসাদের কারণেই সে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সোমবার ভোরে বাড়ির দোতলার একটি কক্ষ থেকে আওয়াজ এবং চিৎকার শুনতে পেয়ে ছুটে যান ইন্দ্রনীলের বাবা বিশ্বজিৎ রায়। দোতলায় উঠতেই তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয় ছেলে। বিশ্বজিতের চিৎকার শুনে তার স্ত্রী উপরে গেলে তাকেও আক্রমণ করে ইন্দ্রনীল।
পরে তাদের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এসে আহতদের উদ্ধার করে দোতলার সিঁড়ির দরজায় তালা লাগিয়ে থানায় খবর দেন। তখনও তারা বিশ্বজিতের মায়ের নিহত হওয়ার বিষয়টি জানতেন না।
স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ এসে ইন্দ্রনীলকে বাড়ির ছাদে হাঁটতে দেখে। একসময় পুলিশের নির্দেশে সে বাড়ির নিচতলায় এসে মুঠোফোনের মাধ্যমে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ এবং প্রতিবেশীদের ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে লাইভ করতে থাকে। এমনকি যারা তার ফেসবুক লাইভ দেখছিলেন, তাদের সঙ্গেও কথা বলছিলেন ইন্দ্রনীল। বলছিলেন, ‘‘এই নরক থেকে আমাকে উদ্ধার করো।’’
এক পর্যায়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বাড়িতে ঢুকে পুলিশ তার ইন্দ্রনীলের দাদির রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখে।
হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশের ধারণা, দীর্ঘদিন ধরেই মাদকাসক্ত ইন্দ্রনীল। চাকরি না পাওয়ার কারণে অবসাদগ্রস্তও ছিল।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো ব্যক্তির ‘অ্যান্টিসোশ্যাল পার্সোনালিটি ডিজর্ডার’ থাকলে তার পক্ষে এমন কাজ করা সম্ভব।