শ্রীলংকায় ইস্টার সানডেতে গির্জা ও বিলাসবহুল হোটেলে আত্মঘাতী হামলার ঘটনায় নিহত হন প্রায় আড়াইশ মানুষ। এ হামলার পর সন্দেহের আঙুল ওঠে স্থানীয় একট একটি মুসলিম চরমপন্থী গোষ্ঠীর দিকে।
এরপর থেকে স্থানীয় সাধারণ মুসলিমরা নানা ধরনের হয়রানির শিকার হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি দাঙ্গার ঘটনায় মুসলিম মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, রমজান মাস জুড়ে মুসলিমরা যখন রোজা পালন করছিলো, তখন উগ্রবাদীদের কাছ থেকে দূরে থাকার জন্য শ্রীলংকার মুসলিমদের ছোট একটি দল নিয়েছে একটি ভিন্ন পদক্ষেপ।
দেশটির কেকিরাওয়া প্রদেশের মাদাতুগামা এলাকায় একটি মসজিদ তারা ধ্বংস করেছে। গত ২৮ মে এ ঘটনা ঘটে। মসজিদটি চরমপন্থী গোষ্ঠী ন্যাশনাল তাওহিদ জামায়াত (এনটিজে) পরিচালনা করতো বলে জানা গেছে।
আকবর খান নামের মাদাতুগামার প্রধান মসজিদের একজন দাতা বলেন, 'ইস্টার হামলার পর অমুসলিমরা মুসলিমদের সন্ত্রাসী হিসেবে দেখতে শুরু করেছে। ইস্টার হামলার পর পুলিশ কয়েক দফা তল্লাশি করেছে মসজিদটিকে। এতে মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। মুসলিমদের সাথে অন্য সম্প্রদায়গুলোর অবিশ্বাসও বেড়ে যায়।
যে মসজিদটি ধ্বংস করা হয় সেটিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ন্যাশনাল তাওহিদ জামায়াত বা এনটিজে সদস্যরা বেশি যাতায়াত করতো বলে মনে করা হয়। পরে এনটিজে পরিচালিত ওই মসজিদটি সিলগালা করে বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
আকবর খান বলেন, 'আমাদের শহরে অন্য যে মসজিদ আছে সেটি মুসলিম পরিবারগুলোর জন্য যথেষ্ট। কয়েক বছর আগে অন্য একটি গোষ্ঠী প্রশ্নবিদ্ধ মসজিদটি নির্মাণ করে। পরে মে মাসে পুরনো মসজিদের সদস্যরা একটি সভায় মিলিত হয়ে সর্বসম্মত হয়ে বিতর্কিত মসজিদটি ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে স্থানীয়রা সেটি ধ্বংস করে।'
আকবর আরও বলেন, 'মিনার, নামাজ কক্ষ ধ্বংস করে ভবনটি পুরনো মালিকের হাতে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।'
তবে মসজিদ ধ্বংস করে ফেলার সিদ্ধান্ত সবাই ভালোভাবে নেয়নি। শ্রীলংকায় মুসলিমদের সর্বোচ্চ তাত্ত্বিক কর্তৃপক্ষ অল সিলন জামিয়াতুল উলামা বলছে, 'প্রার্থনার জায়গার ক্ষতি করা উচিত নয়। মসজিদ আল্লাহর ঘর। এর ধ্বংস বা ক্ষতি করা ইসলামী চেতনার পরিপন্থী।'