আফগানিস্তানে মসজিদের ভেতরে একাধিক বোমা বিস্ফোরণে ৬২জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) জুমার নামাজের সময় দেশটির নানগারহার প্রদেশের হাসকা মিনা জেলায় এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এখবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। বিস্ফোরণের ফলে মসজিদটির ছাদ ধসে মুসল্লিদের ওপর পড়েছে বলেও খবরে বলা হয়।
`আফগানিস্তানে সহিংসতা অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছেছে', জাতিসংঘের এমন বক্তব্যের একদিন পরেই এমন ঘটনা ঘটল। প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র আতাউল্লাহ খোগিয়ানি বলেন, “বেশ কিছু বোমা মসজিদের ভেতরে রাখা হয়েছিল। আর সেসব বোমাই বিস্ফোরিত হয়েছে।”
নিহতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করে প্রাদেশিক কাউন্সিলর সোহরাব কাদেরি বলেন, “বোমা বিস্ফোরণের পর ছাদের নিচ থেকে নিহত ও আহতদের উদ্ধার কাজ করে স্থানীয় মানুষ।”
এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মালিক মোহাম্মদি গুল শিনওয়ারি বলেন, “মসজিদটি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। আমি যা দেখেছি, তা ছিল হৃদয়বিদারক দৃশ্য।”
দেশটির প্রেসিডেন্টের বাসভবনের মুখপাত্র সাদিক সিদ্দিকি এই ঘটনাকে আত্মঘাতী বোমা হামলা উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, তালেবান এবং তাদের সমর্থকেরা নামাজের সময় বেসামরিক লোকদের ওপর জঘন্য অপরাধ কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তালেবানের মুখপাত্র সুহেল শাহিন।
প্রাদেশিক পুলিশের মুখপাত্র মুবারেজ আটল সংবাদ সংস্থা এএফপি’কে বলেন, নিহত সবাই পুণ্যার্থী ছিলেন। তবে আহতের সংখ্যা তিনি উল্লেখ করেছেন ৪০জন।
সহিংস এই ঘটনার কেউ দায় স্বীকার করেনি। তবে ওই প্রদেশে জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবান ও ইসলামিক স্টেট (আইএস) সক্রিয় রয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নতুন এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানায়, গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে ‘নজিরবিহীন’ বেসামরিক লোক নিহত অথবা আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনের তথ্য মতে, গত তিন মাসে আফগানিস্তানে বিভিন্ন সহিংসতায় নিহত ও আহত হয়েছেন ৪ হাজার ৩১৩ জন। দেশটিতে অস্থিতিশীলতার জন্য আইএস এবং তালেবানের মতো সরকারবিরোধী পক্ষকে দায়ী করে সংস্থাটি বলছে, সরকার সমর্থক বাহিনীর কারণে হতাহতের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।